নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বিক্রি বন্ধে কঠোর হোন

 

ডায়াবেটিস বর্তমানে দেশে খুবই সাধারণ একটি রোগে পরিণত হয়েছে। যারা এ রোগে আক্রান্ত প্রতিনিয়তই তাদের এটির মাত্রা পরিমাপ করতে হয়। আর এটি পরিমাপ করার জন্য যেসব উপকরণ দরকার হয়, তা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে নকল উপকরণ তথা স্ট্রিপ শনাক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে নকল স্ট্রিপও জব্দ করেছে। অধিদপ্তরের অভিযানে কয়েকটি দোকান শনাক্ত হয়েছে, যেখানে এই নকল স্ট্রিপ পাওয়া গেছে। কিন্তু বাজারে ব্যাপক মাত্রায় এটি ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। এ জন্য নকল স্ট্রিপ বিক্রি বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

দৈনিক শেয়ার বিজে গতকাল ‘ডায়াবেটিস স্ট্রিপ নকল করে বাজারে ছেড়েছে ফার্মা সল্যুশনস’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বিদেশ থেকে অনুমোদন ছাড়া ডায়াবেটিস স্ট্রিপ দেশে এনে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির মোড়কে (নকল) বাজারে ছাড়ছে ফার্মা সল্যুশনস নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যরা এমন কাজ করছে কি না, তার অনুসন্ধান চলছে। বিশ্বখ্যাত রোশ ফার্মাসিউটিক্যালসের নাম ব্যবহার করে এমনটি করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এতে একদিকে রোগীরা যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে অনুমোদনহীন এসব স্ট্রিপের মাধ্যমে সঠিকভাবে ডায়াবেটিস নির্ণয় না হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এতে করে ডায়াবেটিস রোগীর সঠিক চিকিৎসা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এভাবে একজন ডায়াবেটিস রোগীর জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজার থেকে এমন নকল স্ট্রিপ অপসারণে উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু বাজারে খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে অভিযান চালানোর তুলনায় এমন নকল স্ট্রিপের উৎসমুখগুলো যদি বন্ধ করা যায়, তাহলে সে বিষয়টি বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করি। এক্ষেত্রে যেসব আমদানিকারক ও পরিবেশক এমন নকল স্ট্রিপ আমদানি ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে যুক্ত, তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া আবশ্যক।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যথার্থই বলেছেন যে, এমন নকল স্ট্রিপ বিক্রি মানুষ হত্যার শামিল। কাজেই এক্ষেত্রে দোষীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া আবশ্যক বলে মনে করি। তাছাড়া এমন নকল পণ্য আমদানিকারকদের কারণে প্রকৃত আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি যারা নৈতিকভাবে সৎ থেকে ব্যবসা করতে চান, তারা মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এতে করে উত্তম চর্চায় অভ্যস্ত ব্যবসায়ীরা জরুরি এসব পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। এতে দেশের নাগরিকরা ভালো ও উন্নতমানের সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন বৈকি। কাজেই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সব অংশীজনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া আবশ্যক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আরও বেশি তৎপর হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০