নকল পরিচয়পত্র দিয়ে ঋণ, আটক পাঁচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় দুই বছর থেকে করে আসা ব্যাংক জালিয়াতির হোতা আবদুল্লাহ-আল-মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে দুটি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ধরা পড়েছেন তিনি। আল-মামুনসহ পাঁচজনকে শনিবার রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানতে পারে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতেন না তিনি। পরিচয়পত্র মিলিয়েও খুঁজে পাওয়া যেত না গ্রাহককে। কারণ তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ছিল জাল। এই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তিনি বানিয়েছেন প্রায় লাখ টাকা খরচ করে। তবে এখানেই শেষ নয়, যারা বানিয়ে দিয়েছেন, তাদের শর্ত ছিল, ব্যাংকঋণ পেলে তা থেকে ১০ ভাগ অংশীদারিত্ব দিতে হবে। অর্থাৎ ২০ লাখ টাকায় দিতে হচ্ছে ২ লাখ টাকা।

মামুন (৪১) ছাড়া অন্যরা হলেন সুমন পারভেজ (৪০), মো. মজিদ (৪২), সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর (৩২), আনোয়ারুল ইসলাম (২৬)। তাদের মধ্যে সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুল আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পেয়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে  ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করেছিলেন। তাদের থেকে দ্বৈত, জাল ও ডুপ্লিকেট ১২টি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ডিবি। এই অভিযানটি চালিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ।

লালবাগ বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, ‘মামুন ইতোমধ্যে দুটি ব্যাংক থেকে নকল জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ২০ লাখ টাকা লোন নিয়েছে। রাতে আরেকটি নকল জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার জন্য এসেছিল, তখন গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়।’ মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডের ডি-ব্লক এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই চক্রের অপকর্ম তুলে ধরে ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার রাজিব আল মাসউদ বলেন, ‘ব্যাংকের লোন নিয়ে কেউ ঋণখেলাপি হলে তাদের সিআইবি খারাপ হয়, ফলে পুনরায় তারা ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করতে পারে না। তাদের জন্য এরা জাল এনআইডি করিয়ে দেয়।’ অপরাধমূলক এ ধরনের কাজের কন্টাক নিত সুমন ও মজিদ। সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুলের মাধ্যমে এসব কাজ তারা করিয়ে নিতেন বলে জানান ডিবি কর্মকর্তারা।

উপ-কমিশনার রাজিব বলেন, ‘সুমন ও মজিদ জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে লোন পাস হলে লোনের টাকার ১০ শতাংশ হারে দিতে হবে মর্মে চুক্তি করত। চুক্তিতে একমত হলে তারা প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিত। পরে লোন পাস হলে চুক্তি অনুযায়ী লোনের সম্পূর্ণ টাকার ১০ শতাংশ বুঝে নিত।’

রাজিব আরও বলেন, ‘সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর ও আনোয়ারুল ইসলাম ‘ই-জোন’ কোম্পানির মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পেয়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করার কারণে তারা নির্বাচন কমিশন অফিসের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে পারত।’ গত দুই বছর ধরে তারা এই জালিয়াতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১