নিজস্ব প্রতিবেদক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এখন টিকে থাকার সংগ্রামে দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এক কঠিন সময় পার করছে রপ্তানি খাত। ঈদের আগেই এ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে আরও অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা নগদ সহায়তা দাবি করেছে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)। অন্যথায় শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেয়া নিয়ে চরম বিপদে পড়তে পারে রপ্তানি খাত।
গত বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এসব কথা উল্লেখ করে সংগঠনটি।
বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের নগদ সহায়তা বাবদ বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে সাত হাজার ৮২৫ কোটি টাকা (পাট ব্যতীত)। জুলাই-সেপ্টেম্বরের প্রথম কিস্তিতে ২৮ আগস্ট ছাড় করা হয়েছিল এক হাজার ৯০০ কোটি টাকা, অক্টোবর-ডিসেম্বরের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ছাড় করা হয়েছিল ২৭ ডিসেম্বর টাকা এক হাজার ৫০০ কোটি। যদিও ওই সময়ে ক্লেইম জমা হয়েছিল প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
‘ফলে বকেয়া থেকে যায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে গত ২৮ মার্চ ছাড় করা হয়েছে জানুয়ারি-মার্চ তৃতীয় কিস্তির দুই হাজার কোটি টাকা, যা বর্তমান চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। ঈদের আগে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য প্রয়োজন হবে আরও কমপক্ষে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা।’
এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে আরও অন্তত এক হাজার কোটি টাকা চতুর্থ কিস্তি থেকে ছাড় করতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় শ্রমিক নিয়ে চরম বিপদে পড়তে পারে রপ্তানি খাত, এমনটিও জানানো হয় ওই চিঠিতে।
এতে আরও বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সারা বিশ্বের অর্থনীতি অনেকটা স্থবির। টিকে থাকার সংগ্রামে দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। এক কঠিন সময় পার করছে রপ্তানি খাত। বিশ্ব মন্দার কারণে অধিকাংশ কারখানাতে পর্যাপ্ত কার্যাদেশ নেই। ৫০-৬০ শতাংশ ক্যাপাসিটি নিয়ে চলছে উৎপাদন, যা রপ্তানি করে মাস শেষে শ্রমিকের বেতন দেয়াও কঠিন হয়ে পড়ছে। আবার যা রপ্তানি হচ্ছে, সেই বিলও ক্রেতারা যথাসময়ে পরিশোধ করছেন না।
‘সামনের মাসেই রয়েছে বেতন ও ঈদ বোনাসের বিশাল চাপ। সময়টাও খুবই স্পর্শকাতর। যথাসময়ে বেতন-বোনাস দেয়ার ব্যর্থতায় ঘটে যেতে পারে শ্রম অসন্তোষ। এমন পরিস্থিতিতে সরকার তথা অর্থ বিভাগের বিশেষ সহযোগিতা ছাড়া চাপ সামলে ওঠা খুবই কঠিন হয়ে যাবে’ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।