প্রতিনিধি, ফরিদপুর: ফরিদপুরের নগরকান্দায় রাতের আঁধারে পৌরসভা ভবনের সামনের একটি সরকারি পুকুরের জমি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দখল করে নেয়া হয়েছে। গত ঈদের সময় থেকে এই পুকুরের জমি দখলের জোর চেষ্টা চলছিল। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ভ‚মিদস্যুরা সেটি ঘিরে নেয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে পুকুরের দক্ষিণ পাশে প্রায় এক-চতুর্থাংশ জায়গা বাঁশ গেড়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেখানে পুকুর ভরাট করে দোকান ঘর তৈরির প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় নগরকান্দা পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দখলকারীদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। যাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে তারা হলেনÑছাগলদি গ্রামের আবুল হোসেন ফকির, রাজিব হোসেন, সাইফুল আলম শরিফ, চৌমুখার জিল্লুর রহমান, শশার বদিউজ্জামান শরিফ ও নগরকান্দা সদরের মোশাররফ হোসেন মিয়া। গতকাল এ নোটিস দেয়া হয়। তাদের সেখানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ বা ভরাট না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
নগরকান্দা পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির মাহমুদ বলেন, নগরকান্দা পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয়ের পাশেই প্রায় ৩০ শতাংশ জায়গাজুড়ে পুকুরটি অবস্থিত। পুকুরের দক্ষিণে রাস্তাসংলগ্ন কিছু ব্যক্তিমালিকানা জমি রয়েছে, কিছু রয়েছে লিজ নেয়া। ওইসব জমিতে দোকানঘর তোলা। ওই দোকান মালিকেরা এখন রাতারাতি পুকুরের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জমি বাঁশ দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। পুকুরটি রক্ষার জন্য দ্রæত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র নিমাই চন্দ্র সরকার বলেন, প্রায় ৩০ শতাংশ জমিজুড়ে পুকুরটি বিস্তৃত। রাতের আঁধারে ওই পুকুরের বিরাট অংশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে দখল করা হয়েছে। ওই জমি সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি জানান, অনুমোদন না নিয়ে ওই পুকুরের জায়গা ভরাট করে ঘর নির্মাণ করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং সশরীরে হাজির হয়ে এ ব্যাপারে জানানোর জন্য জবর-দখলদারীদের অনুরোধ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওই পুকুরের জমি দখলকারীদের পক্ষে জিল্লুর রহমান নামে একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুকুরের একপাশে বাঁশ গেড়ে দখলের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই পুকুরের লাগোয়া তিন শতাংশ জমি রয়েছে তাদের তিন ভাইয়ের নামে। আমাদের দখলের ওই জমির পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। তাই আমরা পুকুরের একপাশে বাঁশ গেড়ে বেড়া দিয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) এন এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুকুরের জমি দখলের জন্য অনেক আগে থেকেই চেষ্টা চলছে। ঈদের আগে এ জন্য রাত জেগে পাহারা দিয়েছি। তিনি বলেন, রাতের আঁধারে ওই পুকুরের জমি বাঁশ গেড়ে দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর নির্দেশ দিয়েছি। যথাযথ কাগজপত্র দেখাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।