নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব অর্থনীতির প্রদান ভিত্তিই এখন নগরায়ণ। বিশ্বের প্রতিটি মহাদেশেই প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক মানুষ নগর জীবনের অংশ হচ্ছে। আর এদের জন্য প্রয়োজন নতুন নতুন অবকাঠামো। তাই বর্তমান সময়ে নগরায়ণের প্রধান চ্যালেঞ্জ অবকাঠামো উন্নয়ন। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও বিশ্বব্যাংকের সমন্বিত আয়োজনে অনুষ্ঠিত বক্তৃতা সভায় গতকাল এ কথা বলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যান্টনি ভ্যানাবল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘সিটিস ফর ডেভেলপমেন্ট, লিভাবেলিটি অ্যান্ড প্রোডাক্টিভিটি’ শীর্ষক প্রবন্ধে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের নগরায়ণের চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরেন তিনি।
নগরায়ণের উচ্চ উৎপাদনশীলতা ও উচ্চ ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে জমির দক্ষ ব্যবহার, অবকাঠামো ও উপযোগিতা, সমন্বয় এবং অতিরিক্ত সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীতিগত বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেন অ্যান্টনি ভ্যানাবল। সর্বোপরি তিনি পরামর্শ দেন নগরের অর্থনীতিকে ভালোভাবে বুঝতে হবে। কারণ নগরের কৌশলই হলো একটি দেশের উন্নয়নের কৌশল। এর সঙ্গে প্রয়োজন রয়েছে উদ্ভাবনমূলক অর্থনৈতিক চিন্তার।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারপারসন ড. নাজমা বেগম। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে নগরায়ণের বিকল্প নেই। তবে বাংলাদেশের মতো দেশে চাকরিপ্রাপ্তিই নগরায়ণের উদ্দেশ্য না হয়ে এটিকে আরও উদ্ভাবনমূলক করার সময় এসেছে। এ দেশের নগরায়ণের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অবকাঠামোর উন্নয়ন। তিনি আরও বলেন, নগরায়ণের ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারি নীতির সঙ্গে সঙ্গে জনগণের সচেতনতাও বিশেষ দরকার। চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ নগরায়ণের ঝঁকিুর ফলেই সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি আমরা দেখলাম এ ব্যাপারে মেয়র ও জনগণ পরস্পরকে দোষারোপ করে চলেছে। কিন্তু তা না করে প্রয়োজন গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ।
আলোচকদের মধ্যে সভায় সেন্টার পলিসি ফর ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, নগরায়ণে জনসাধারণের স্বার্থকেই সর্বাধিক প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এটি ২০৩০ সালের এসজিডির লক্ষ্যপূরণে নগরায়ণে সহায়ক হবে। এ সময় বাংলাদেশের মতো দেশে দক্ষ নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে টেকসই নগরায়ণের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, নগরায়ণের জন্য একটা ‘ভিশন’ নির্ধারণ করা খুবই জরুরি। এ ভিশন বাস্তবায়নে নীতিপ্রণেতাদের মনোভাবকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
বক্তৃতা সভায় সভাপতিত্ব করেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. সেলিম রায়হান। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের চেয়ারম্যান ড. বজলুর হক খন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
Add Comment