Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 8:37 am

নতুন আইন আসছে ইলেকট্রনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ব্যাংকিং পরিচালনা, লেনদেন ও ব্যবস্থাপনায় নতুন একটি আইনের খসড়ায় নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে ‘পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট সিস্টেমস আইন, ২০২১’-এর খসড়ায় এ অনুমোদন দেয়া হয়।

পরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিশ্বায়নের যুগে দ্রুতগতিতে ব্যাংকিং ও আর্থিক ব্যবস্থার উন্নতির ফলে আইসিটিভিত্তিক ব্যাংকিং এখন অপরিহার্য।

‘ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও লেনদেন হচ্ছে। এজন্য পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট আইন প্রণয়ন করা খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ব্যাংক ও কোম্পানিগুলোর ‘পরিশোধ ব্যবস্থা’ পরিচালনা বা ইলেকট্রনিক মুদ্রায় পরিশোধ সেবা দেয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

‘বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে কার্যরত সকল পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনাকারী, অংশগ্রহণকারী ও সেবাদানকারীর কার্যক্রম পরিচালনায় অনুমতি প্রদান ও তদারকি করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিজে বা প্রয়োজনে তার অনুমোদিত কোনো কর্তৃপক্ষ দিয়ে আন্তঃব্যাংক ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থাগুলো যেভাবেই অবিহিত থাকুক না কেন, পরিচালনা করতে পারবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতদিন পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে আলাদা কোনো আইন ছিল না। ইলেকট্রনিক মাধ্যমে টাকা পয়সা বা ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আইন না থাকায় এবং পরিশোধ ব্যবস্থায় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক লেনদেন চালু থাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থার রুলস পরিচালনার জন্য চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করতে হতো।

‘সেজন্য কন্ট্রাক্ট ল থেকে বের করে নিয়ে এসে পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট আইন করা হয়েছে। পেমেন্ট সিস্টেমে কন্ট্রাক্ট অ্যাক্ট দিয়ে পরিচালনা কাভার করা যাচ্ছে না, সেজন্য এ আইন করা হয়েছে।’

নতুন আইন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইলেকট্রনিক লেনদেন বিস্তারের ফলে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিশোধ সেবাকারীদের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আইনি কাঠামোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। সেজন্য এ আইন করা হয়েছে। শুধু কন্ট্রাক্ট আইন দিয়ে টেকিনিক্যালি কাভার করা যাচ্ছিল না সব, এজন্য একটি স্পেশাল আইন করা হয়েছে।’

এদিকে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে কুড়িগ্রামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২১’-এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, অন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসরণ করে নতুন এ আইন করা হচ্ছে। নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা হলে দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হবে ৪৬টি, আর বর্তমানে ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চালু রয়েছে।

কুড়িগ্রামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য গত বছরের ২১ ডিসেম্বর এ-সংক্রান্ত আইনের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। খসড়া আইনটি আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হলো।

এ আইনের নীতিগত অনুমোদন দেয়ার দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, কৃড়িগ্রাম একসময় মঙ্গাপীড়িত ছিল, সেখানে যদি এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় হয় তবে গবেষণা হবে, ফার্মিং হবে। এর মধ্যে দিয়ে তাদের অবস্থার আরও উত্তরণ হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও ফার্মিংয়ের মাধ্যমে যে টেকনোলজি ডেভেলপ হবে তা কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাটে বিস্তৃত হলে ওই লোকজন ফার্মিংয়ের মাধ্যমে ভুট্টা, শাক-সবজি, মিষ্টিআলু ও মিষ্টিকুমড়া, মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে তাদের অবস্থার আরও উন্নত করতে পারবে।’