নতুন কারিকুলামে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা যুক্ত হবে: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী বছর থেকে শিক্ষার নতুন কারিকুলামে অভিজ্ঞতাভিত্তিক বা সক্রিয় শিক্ষাব্যবস্থা যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের নটর ডেম কলেজে ১৩ম জাতীয় প্রকৃতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে আমরা প্রকল্পভিত্তিক শিক্ষায় জোর দিচ্ছি। যেখানে অভিজ্ঞতাভিত্তিক বা সক্রিয় শিক্ষা থাকবে। আমাদের নতুন কারিকুলাম যেটা রয়েছে। আগামী বছর থেকে তা বাস্তবায়ন শুরু হবে। সে কারিকুলামের ভেতরে এ অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষাকে বা সক্রিয় শিক্ষাকে শেখার মূল পদ্ধতি হিসেবে রেখেছি। 

তিনি বলেন, ২০২০ সালে আমরা একটি গাছ লাগানোর প্রকল্প নিয়েছিলাম। সেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেরা গাছ পছন্দ করেছে, উপযুক্ত স্থান পছন্দ করেছে এবং যতœ নিয়েছে। সেখান থেকে একটি জার্নাল তারা লিখেছে, কেন তারা গাছ, স্থান নির্বাচন ও যতœ করেছে। সেখানে কোন ধরনের মাটি ও সার ব্যবহার করেছে এসব কিছু তারা সে জার্নালে লিখেছে। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা জীবনকে যতœ করতে শিখেছে। একজন মানুষ হতে হলে এগুলো অপরিহার্য। কাজেই আমরা চাই যে এই শিক্ষার্থীরা পরিবেশ সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন হোক। মা-বাবা সন্তানের জন্য ভাবেন পরিবেশ নিয়ে ঠিক তেমন ভাবতে হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি ভালো পরিবেশ দিয়ে যেতে হবে। সে জন্য সবুজ লাগবে প্রকৃতিকে জানতে হবে বুঝতে হবে। তাহলে প্রকৃতিকে ভালোবাসতে পারব। আমরা প্রকৃতির সন্তান প্রকৃতিকে যদি ভালোবাসি, সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করি তাহলে আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করব বলে আমি মনে করি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার পরিবেশ ও সবুজায়নের কথা বলেছেন। তার একটি বড় প্রকল্প রয়েছে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’। সেখানে টেকসই জীবনযাপনের কথা বলা হয়েছে। এটি একটি ভালো প্রকল্প সারাদেশে চলছে। আর সরকার ও গণমাধ্যমে প্রচারণার জন্য হয়তো আমরাও একটু একটু করে পরিবেশকে ভালোবাসতে শিখেছি। এ লক্ষ্যে সরকার প্রতিবছর পহেলা আষাঢ় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে। এ ছাড়া ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ পালন উপলক্ষে সারাদেশের ৩৩ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১০০টি করে গাছ লাগিয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ৩৩ লাখ গাছ সারাদেশে লাগিয়েছে শিক্ষা পরিবার। এ কার্যক্রম আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। প্রতিটি

 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজ আঙিনায় হোক, সে এলাকার উপযুক্ত স্থান হোক বা ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে হোক সব জায়গায় যেন এ কাজটি করে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নটর ডেম নেচার সামিট ক্লাব একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা দেশের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। ১৯৮৪ সালে প্রকৃতিকে ভালোবাসুন এই সেøাগান নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এই ক্লাবের আজকে সারাদেশের প্রতিটি বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে এত বড় একটি কর্মযজ্ঞ চলছে। যার মধ্য দিয়ে পরিবেশের কথা, এর প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব, সৌন্দর্যের কথা সব শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে। পরিবেশ প্রকৃতি ও বন এসব নিয়েই আমাদের জীবন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা কেউ ভাবি না। আমাদের নিজেদের বর্জ্য যদি নিজেরা সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করি তাহলে পৃথিবীর জন্য বিশাল কাজ হয়ে যাবে। একইভাবে গাছের ক্ষেত্রে আমি যতটুকু অক্সিজেন গ্রহণ করছি সেটুকুর ব্যবস্থা যদি নিজে করি তাহলে পৃথিবীটা আমাদের জন্য বাসযোগ্য করে তোলা সম্ভব। কারণ অক্সিজেনের কোনো বিকল্প নেই। সে জন্য এ খাতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের পরিবেশ সুরক্ষা করতে হলে। প্রাকৃতিক যে সম্পদ রয়েছে, তা খুব পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করতে হবে। টেকসই জীবনযাপন করতে হলে পরিবেশকে ঠিক রাখতে হবে।

নটর ডেম কলেজের প্রিন্সিপাল ড. হেমন্ত পিউস রোজারিও’র সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নটর ডেম কলেজের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) ড. ফাদার প্যাট্রিক ডানিয়েল গ্যাফনি, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিদ মজুমদার বাবু, ১৩ম জাতীয় প্রকৃতি সম্মেলনের প্রধান সমন্বয়ক বিপ্লব কুমার দেব। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০