নতুন কারিকুলামে সাপ্তাহিক ছুটি হবে দুদিন

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন কারিকুলাম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মাধ্যমিক স্তরে ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হলেও প্রাথমিকে তা মার্চ থেকে শুরু হবে। আর নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি কাটাতে পারবেন। গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

তবে যে শিক্ষার্থীরা করোনাভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ নিয়েছে, আপাতত শুধু তারাই ক্লাসে যাবে। যারা দুই ডোজ টিকা নেয়নি, আপাতত তারা বাসায় থেকে অনলাইনে বা টেলিভিশন দেখে ক্লাস করবে।

আর প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরতে আরও অপেক্ষায় থাকতে হবে। যেহেতু ১২ বছরের কম বয়সীরা টিকা পায়নি, সেহেতু ২২ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২২ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং করার কথা। আর ২০২৩ সাল থেকে পরিমার্জিত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের কারিকুলাম বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, নতুন কারিকুলাম ট্রাইআউট ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। প্রাথমিকে মার্চ থেকে শুরু হবে। মাধ্যমিকে ৬২টি এবং প্রাথমিকেও একই সংখ্যায় করার কথা রয়েছে।

মহামারির ছুটির আগে ও পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছুটিগুলো এখনও রয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটিও দু’দিন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকে শনিবার ছুটি রাখেন না। এখন থেকে রাখবেন, সেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা মনে করি, একজন শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর সপ্তাহে দুটো দিন, একটু যদি ব্রেক না হয়। এখন তো কম সময় ক্লাস করছিল, তারপরও একটু ব্রেক দরকার আছে। সেটাকে যদি বাদ দিয়ে দিতে পারতাম, তাহলে কয়েকটা দিন বেশি পেতাম। মাসে চারটা দিন বেশি পেতাম, সেটা ঠিক। আবার ধর্মীয় কিছু ছুটি আছে, নানা রকম বিষয় আছে।’

এদিকে প্রতিদিন কয়টি ক্লাস নেয়া হবে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি পাঠদান শুরুর পর সর্বশেষ যেভাবে শ্রেণি পাঠদান চলেছে, সেভাবেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণি পাঠদান চলবে। যেভাবে চলছিল ঠিক সেই জায়গা থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু করব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের চেষ্টা থাকবে সংক্রমণ যত কমবে, আমাদের ক্লাসের সংখ্যা তত বাড়িয়ে দেবো। আমরা যত দ্রুত পারি ক্লাসের সংখ্যা স্বাভাবিক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।’

ফুল ফেজে কবে থেকে ক্লাস চালু হবে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যখন দুই ডোজ টিকা সবার হয়ে যাবে, তখন চেষ্টা করব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে। আমাদের হয়তো আরও অনেক দিন কভিডের সঙ্গে বাস করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা দুই ডোজ টিকা নেয়া হয়ে গেলে মোটামুটি একটা স্বস্তির জায়গায় থাকতে পারব। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি সেই জায়গায় চলে যেতে পারব।’

উল্লেখ্য, গত বছর নির্ধারিত সর্বশেষ সূচিতে জানানো হয়েছিল, প্রতিদিন প্রতিটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চারটি করে ক্লাস করবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শোহেদুল খবির বলেন, ‘গত বছরের রুটিন অনুযায়ী, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদান চলবে। তবে যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছিল, তখন একাদশে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়নি। শিগগিরই একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির রুটিন তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

গত বছরের নির্ধারিত সূচি সপ্তাহের শনিবার নবম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। রোববার অষ্টম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। সোমবার সপ্তম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। মঙ্গলবার ষষ্ঠ শ্রেণি ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। বুধবার নবম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম চলবে। বৃহস্পতিবার অষ্টম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।

করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপাতত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ক্লাস রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে উপযুক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হবে এবং প্রতিদিন নির্ধারিত চেকলিস্ট অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য পাঠাতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০