নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি খাতে উন্নয়নে ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ রেখে নতুন জাতীয় কৃষিনীতি অনুমোদন করেছে সরকার। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নীতিমালার খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০১৩ সালের কৃষিনীতিকে হালনাগাদ করে নতুন এই কৃষিনীতি করা হয়েছে। ন্যানোপ্রযুক্তি-সংক্রান্ত বিষয়টি এখানে আনা হয়েছে, নীতিমালায় ন্যানোপ্রযুক্তিকে গবেষণার বিষয় হিসেবে দেখানো আছে।’
খসড়া কৃষিনীতিতে ন্যানোপ্রযুক্তির নিয়ে বলা হয়Ñপ্রাথমিক পর্যায়ে ফসলের রোগ, জাতভিত্তিক পুষ্টি চাহিদা নির্ণয় ও পুষ্টি আহরণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ন্যানো সেন্সর ব্যবহারের মাধ্যমে ভূমির গুণাগুণ পর্যবেক্ষণ ও উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এছাড়া কৃষিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি শনাক্ত করা এবং শোধনসহ ন্যানোপ্রযুক্তির সার, বালাইনাশক উদ্ভাবন ও ব্যবহারের মাধ্যমে উপকরণ দক্ষতা অর্জনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
শফিউল জানান, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সেবা, উদ্ভাবনী সম্প্রসারণ প্রযুক্তি, প্রযুক্তি ব্লক স্থাপন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের বিষয়গুলোও নতুন নীতিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।
পদার্থকে আণবিক ও পারমাণবিক পর্যায়ে পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করার কৌশলকে বলা হয় ন্যানোপ্রযুক্তি (ন্যানো টেকনোলজি)। এক মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগকে বলা হয় ১ ন্যানোমিটার। পদার্থের ভেতরে ওই মাত্রার ক্ষুদ্র পর্যায়ে কাজ করে বলে এ প্রযুক্তির এই নাম।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবহার করে চিকিৎসা, ইলেকট্রনিক্সসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। আবার পরিবেশের ওপর এর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব নিয়েও বিস্তর গবেষণা চলছে।
কৃষি খাতে উন্নয়নে ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহারের নীতি অনুমোদনের পাশাপাশি বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে পরিচালকের বদলে একজন মহাপরিচালক নিয়োগের বিধান রেখে এ-সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
শফিউল বলেন, ১৯৭৬ সালের অধ্যাদেশের মাধ্যমে শিশু একাডেমি পরিচালিত হচ্ছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সামরিক শাসনামলে প্রণীত অধ্যাদেশ বাংলায় রূপান্তর করা হচ্ছে।
নতুন আইন অনুমোদন পেলে একাডেমির পরিচালনা ও প্রশাসনের দায়িত্ব ন্যস্ত হবে একটি ব্যবস্থাপনা বোর্ডের ওপর। একাডেমি যেসব ক্ষমতা প্রয়োগ ও কাজ করতে পারবে, বোর্ডও তা পারবে। এই ব্যবস্থাপনা বোর্ড হবে ১৭ সদস্যের।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘শিশু একাডেমিতে এতদিন একজন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হতো। নতুন আইন পাস হলে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শিল্প-সাহিত্যে অবদান আছে এমন ব্যক্তিরা মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাও মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেতে পারবেন। তবে কোন কোন শর্তে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে, তা বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে।’
নতুন আইন পাস হলে ‘সম্মানিত ফেলো’ নামে ফেলোশিপ চালু করা হবে জানিয়ে শফিউল বলেন, ‘শিশুর সামগ্রিক বিকাশ ও উন্নয়নে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, শিল্পকলা অথবা সামাজিক বিশেষ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সাত সদস্যের একটি কমিটি করে ফেলো হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
নতুন কৃষিনীতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
