নতুন জোটে যেতে চাইছে তুরস্ক

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কথা বলার সাহস দেখানোর মতো বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকটি দেশ রয়েছে। অন্য আরও কয়েকটি দেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি অর্থনৈতিক জোট গড়ে তোলার চেষ্টা করছে তারা।

বিশ্বের ধনী দেশগুলোর জোট গ্রুপ সেভেনকে টক্কর দিতে চাওয়া এই জোট ব্রিকস নামে পরিচিত। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা দাপটের সঙ্গে বিশ্ব শাসনে কয়েক বছর ধরেই জোটের কলেবর বাড়াতে চাইছে।

মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য। আবার রাশিয়ার কাছ থেকে সমরাস্ত্র আমদানি করে থাকে দেশটি। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের তিক্ততা রয়েছে।

এবার শোনা যাচ্ছে ব্রিকসে যোগ দিতে চায় তুরস্ক। ন্যাটোর সদস্য হলেও চলতি বছরের শুরুর দিকে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার জন্য কৌশলগত পদক্ষেপ নেয় দেশটি। তুরস্কের তিনজন কর্মকর্তা মিডলইস্ট আইকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তুরস্ক যদি ব্রিকসের সদস্য হতে পারে তাহলে তারাই হবে ন্যাটোভুক্ত প্রথম দেশ। সোম ও মঙ্গলবার রাশিয়ায় ব্রিকসের সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, এই সম্মেলনের তুরস্কের আগ্রহের বিষয়টি আলোচনা করা হবে। যদিও তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আবেদন করলেই যে সবাই সদস্যপদ পাবে তা বলা যাচ্ছে না। এই সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

গত আগস্টে ব্রিকস জানায়, তারা নিজেদের সদস্য সংখ্যা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে। এরই অংশ হিসেবে সৌদি আরব, মিসর, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোয়ান এর আগে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে এই সময়ের আগ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে ব্রিকসের সদস্য বাড়ানোর আগ্রহের পরই এর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা শুরু করে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক ফোরামে তুরস্ক যোগ দিতে চাওয়ায় ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। তুরস্কের আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, ব্রিকসের যোগ দেওয়ার পেছনে তুরস্কের আগ্রহের কারণ হচ্ছে, এতে যোগ দিলে রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক কোনো প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে দায়বদ্ধ থাকতে হবে না। তার ভাষায়, ব্রিকসকে ন্যাটো বা ইইউর বিকল্প হিসেবে দেখে না তুরস্ক। তবে ইইউ আবেদন ঝুলিয়ে রাখায় অন্য অর্থনৈতিক প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে আঙ্কারা।

আসলে কাগজে-কলমে অনেকেই তুরস্কের ‘মিত্র’। কিন্তু এই কথাকথিত মিত্ররা আঙ্কারা নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে অতটা ভাবে না, আর তাই দেশটিকে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রও দিতে চায় না। তাই যে জোটে গেলে সামান্যতম লাভের সুযোগ আছে, তা হাতছাড়া করতে চায় না তুরস্ক।

রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ব্রিকসের প্রভাব এখনও খুবই সামান্য। কিন্তু তুরস্কের বিশ্বাস ভবিষ্যতে আরও প্রভাব বিস্তার গ্রুপ হয়ে উঠতে পারে ব্রিকস।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০