নতুন প্রকল্পে অর্থছাড় এবং ত্রাণ-অনুদান স্থগিতের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনী এলাকায় নতুন প্রকল্প গ্রহণ এবং অর্থ অবমুক্তকরণ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন করে সব ধরনের অনুদান ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও স্থগিত রাখতে বলেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

গতকাল মঙ্গলবার ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত চারটি চিঠি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে। বাকি তিনটি পাঠানো হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী এলাকায় অনুদান দেয়া, নতুন প্রকল্প গ্রহণ এবং অর্থ ছাড় না করতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে বলা হয়েছে নির্বাচনের এই সময়ে কোনো এলাকায় ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম যেন না করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮-এর (সংলগ্নী-২) বিধি ৩ক অনুযায়ী নির্বাচন-পূর্ব সময়ে অর্থাৎ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ দেয়া বা অর্থ অবমুক্ত করতে পারবেন না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উল্লিখিত আচরণ বিধিমালার বিধি ১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় হবেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, সংসদ নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখার লক্ষ্যে নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রার্থী সিটি করপোরেশন/পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পত্তি, তথা

অফিস, যানবাহন, মোবাইল ফোন, টেলিফোন, ওয়াকি-টকি বা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না। এমনকি মাশুল দিয়েও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীকে কোনো অবস্থায় নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

কোনো প্রার্থী সরকারি অর্থে ক্রয়কার্য-সংক্রান্ত কোনো দরপত্র আহ্বান, গ্রহণ, কিংবা বাতিলের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না বলে নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।

সেখানে আরও বলা হয়, সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি-৩ অনুসারে নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, কিংবা ফলক উšে§াচন করতে পারবে না। নির্বাচনের কার্যক্রম সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত অনুদান/ত্রাণ বিতরণ-সংক্রান্ত কার্যক্রম বা উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো।

তবে এর আগে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ অবমুক্ত বা দেয়া নিতান্ত আবশ্যক হলে জরুরি ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের উল্লিখিত নির্দেশনার আলোকে একটি পরিপত্র জারি করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকাগুলোয় নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোনো প্রকার অনুদান-ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম করা যাবে না। তবে যেসব ত্রাণ কার্যক্রম আগে থেকে পরিচালিত হচ্ছে, সেগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। নতুন করে অনুদান বা ত্রাণ বিতরণ-সংক্রান্ত কার্যক্রম আবশ্যক হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা ডিসির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি নিতে হবে।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০