নিজস্ব প্রতিবেদক: উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দে কৃচ্ছ্র সাধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা খাতে’ ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুক‚লে ‘অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের জন্য থোক’ হিসেবে চলতি বাজেটে রাখা হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এর অর্থের পুরোটাই দেশীয় উৎস থেকে নির্ধারণ করা। এ থোক থেকে নতুন করে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার আগে অর্থ বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৬ জুলাই এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের সদস্য বরাবর পাঠায় অর্থ বিভাগ। অর্থ বিভাগের বাজেট অধিশাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘অর্থ বিভাগের পরামর্শ ব্যতিরেকে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় পরিকল্পনা কমিশনের অনুক‚লে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা খাতে’ জিওবি বাবদ সংরক্ষিত ৫০০ কোটি টাকা এবং মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনুক‚লে ‘অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের জন্য থোক’ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবির সম্পূর্ণ অর্থ থেকে বরাদ্দ প্রদান না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
কেবল সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে এ ধরনের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের যে ঋণ থাকে, সে ঋণের অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে চিঠিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে থমকে গেছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। এর থাবায় দেশের রাজস্ব আহরণেও বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিপরীতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যয় বেড়েছে সরকারের। ফলে সরকার ব্যয় নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে চলতি অর্থবছর সরকার সরকারি কর্মকর্তাদের রুটিন ভ্রমণ পরিহারের নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে অপরিহার্য ক্ষেত্রেও সব ধরনের (দেশ-বিদেশ) ভ্রমণ ব্যয় অর্ধেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ১৯ জুলাই অর্থ বিভাগের এ-সংক্রান্ত পরিপত্রে বলা হয়, করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোয় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শুধু জরুরি ও অপরিহার্য ক্ষেত্র বিবেচনায় ভ্রমণ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করা যাবে; তবে সরকারি ভ্রমণের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত অর্থের ৫০ শতাংশ বরাদ্দ স্থগিত থাকবে। অর্থাৎ অর্ধেক ব্যয় দেওয়া হবে। পাশাপাশি সব ধরনের রুটিন ভ্রমণ পরিহার করতে হবে।
এছাড়া আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নতুন গাড়ি কেনায় সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছর বাস্তবায়নাধীন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় নিম্ন অগ্রাধিকার বা কম গুরুত্বপূর্ণ এবং মধ্যম অগ্রাধিকারের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ খরচ বন্ধেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।