প্রতিনিধি, ফেনীঃ আর মাত্র দুই দিন পরই (১ জানুয়ারি) সরকার ঘোষিত বই উৎসবের দিন। কিন্তু ফেনীতে এখনই এসে পৌঁছায়নি চাহিদা অনুযায়ী বই। জেলায় প্রাথমিকের শতভাগ বই এলেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য বই এসেছে মাত্র ৩৭ শতাংশ। যে সংখ্যক বই পৌঁছেছে তা সব শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ট নয়। তবে বই উৎসব নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ বলছে যথাসময়েই বই পাওয়া যাবে।
জেলা শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্যমতে, ফেনীতে মাধ্যমিকে মোট শিক্ষার্থী ১ লাখ ৬৪ হাজার ১৮৫ জন এবং মাদরাসায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫ জন। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে বইয়ের মোট চাহিদা ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৩৯২টি। কিন্তু ফেনীতে এখন পর্যন্ত বই এসেছে ১০ লাখ ৬ হাজার ২২০টি। মোট প্রাপ্তির হার ৩৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এদিকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে শুরু হচ্ছে নতুন কারিকুলামে পাঠদান। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অষ্টম ও নবম শ্রেণির নতুন কারিকুলামের কোনো বই ফেনীতে আসেনি। জেলায় মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে শুধু অষ্টম ও নবম শ্রেণির চাহিদা রয়েছে ১০ লাখ ২৮ হাজার ১৭৮টি বই। অষ্টম এবং নবম শ্রেণি ছাড়া অন্যান্য শ্রেণির বই প্রাপ্তির হার ৬০ দশমিক ৫০ শতাংশ। একই সূত্র জানায়, জেলায় চাহিদার সম্পূর্ণ বই আসতে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
নতুন কারিকুলামের বই না পৌঁছানো প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফি উল্ল্যাহ বলেন, একদমই বই আসেনি তা ঠিক নয়। কিছু বই এসেছে। সব বই কবে পাওয়া যাবে সেই বিষয়ে আরও দুই দিন পর বিস্তারিত বলা যাবে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সব বই পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বই উৎসব যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ফেনীতে সম্পূর্ণ বই না এলেও প্রতিদিন ধাপে ধাপে বই আসছে। যানবাহনের কিছু সমস্যা থাকাতে বই আসতে দেরি হচ্ছে। যখনই বই আসছে সঙ্গে সঙ্গে স্কুল ভিত্তিক পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা নতুন বই নিয়ে আনন্দোৎসব করে বাড়িতে যেতে পারবে। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিবারের মতো এবারও বই উৎসব করা হবে। তবে মাধ্যমিকে শতভাগ বই না এলেও জেলায় প্রাথমিকের শতভাগ বই এসেছে। বছরের প্রথম দিনেই প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা শতভাগ বই হাতে পাবেন বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্যানুযায়ী, প্রাথমিকে জেলায় মোট বরাদ্দকৃত বইয়ের সংখ্যা ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৩টি। এর মধ্যে সব বই ইতোমধ্যে জেলার ৫৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছে গেছে। ফেনীর ৬ উপজেলায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৩টি বইয়ের মধ্যে সদর উপজেলায় বরাদ্দকৃত বই ২ লাখ ৬৯ হাজার ২৩৮টি, দাগনভূঞায় ১ লাখ ১৭ হাজার ৮৬১টি, সোনাগাজীতে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২০০টি, ছাগলনাইয়ায় ৫৭ হাজার ৩৪টি, পরশুরামে ৩৯ হাজার ৫৫০টি ও ফুলগাজীতে ৫৫ হাজার ৬৪০টি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সব স্কুলে ইতোমধ্যে বই পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকের কারিকুলামে খুব বেশি পরিবর্তন না হলেও ভেতরে কিছু পাঠ পরিবর্তন হয়েছে। ফলে পুরোনো বই দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সব শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে।
বই উৎসবের ব্যাপারে তিনি বলেন, মাধ্যমিকের সঙ্গে মিল রেখে বই উৎসব করার কথা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ফেনী সরকারি পাইলট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জেলা প্রশাসক বই উৎসবের উদ্বোধন করবেন।
