নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি পেলো শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড মিডল্যান্ড পাওয়ারের ৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) গত ১০ আগস্ট মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানিকে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) দিয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নির্মাণ করা হবে। ডিজেলচালিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১৫০ মেগাওয়াট। কোম্পানিটি ১৫ বছরের জন্য বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যাচ্ছে। যেহেতু শাহজিবাজার মিডল্যান্ড পাওয়ারের ৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক, তাই এই কেন্দ্রে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলে শাহজিবাজার পাওয়ারের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত রোববার লেনদেনের শেষে এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওইদিন শেয়ারটির দর কমেছে ৯০ পয়সা বা দশমিক ৬১ শতাংশ।
কোম্পানিটি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত হিসাববছরে ৩০ শতাংশ নগদ ও তিন শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। এ সময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে পাঁচ টাকা ১৪ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ৩২ টাকা ছয় পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
২০১৫ পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরে ২৮ শতাংশ নগদ ও তিন শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে, যা আগের বছর ছিল ২৫ শতাংশ নগদ ও পাঁচ শতাংশ বোনাস। এ সময় ইপিএস হয়েছে সাত টাকা ২০ পয়সা এবং এনএভি ৩০ টাকা ৬০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে চার টাকা ১৩ পয়সা ও ২৮ টাকা ১৭ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল ৯৫ কোটি ৮৯ লাখ ২০ হাজার টাকা, যা আগের বছর মুনাফা ছিল ৪৭ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা।
সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ বা ৯০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ১৪৭ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ১৪৭ টাকা ৪০ পয়সা। দিনজুড়ে চার লাখ ৪০০টি শেয়ার মোট ৬৬২ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর পাঁচ কোটি ৮৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা। ওইদিন শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১৪৬ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৪৯ টাকায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ১৩৪ টাকা থেকে ১৭৬ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৯৩ পয়সা। এটি আগের বছরের একই সময় ছিল এক টাকা ১৮ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ৭৫ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত এনএভি ছিল ৩৩ টাকা ৯৯ পয়সা। এটি একই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৩২ টাকা ছয় পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৮৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল এক টাকা ১৮ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ৬৭ পয়সা। দুই প্রান্তিকে অর্থাৎ গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ইপিএস হয়েছে তিন টাকা ৭৭ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময় ছিল দুই টাকা ৩৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত এনএভি ছিল ৩৫ টাকা ৮৪ পয়সা, যা একই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৩২ টাকা ছয় পয়সা।
তৃতীয় প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৮৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল এক টাকা ২৩ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ৬৬ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত এনএভি হয়েছে ৩৩ টাকা ৭৭ পয়সা, যা আগের বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৩১ টাকা ১৩ পয়সা।
৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধন এবং পরিশোধিত মূলধন ১৪১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ২০৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (ইপি) অনুপাত ২৮ দশমিক ৬৮ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ১৯ দশমিক ৯২। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৯৮টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৬৮ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ১৯ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার।