Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 10:31 pm

নতুন ব্যাংক অনুমোদন অসুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করবে

সম্প্রতি আরও তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন দেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা ৬২। বিদ্যমান ব্যাংকগুলো পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। সেখানে আবার নতুন করে তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হলো। এটি আসলে সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের জন্য সুখকর নয়। বরং এগুলো বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করবে। কারণ, অর্থনীতির আকার অনুযায়ী দেশে ৩০ থেকে ৩৫টি ব্যাংক পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এখন ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২টিতে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের
সিনিয়র নিউজ কনসালট্যান্ট রায়হান এম চৌধুরী এবং লংকা-বাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের হেড অব বিজনেস এসএম নাসির উদ্দিন।
রায়হান এম চৌধুরী বলেন, আরও তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন মোট ব্যাংকের সংখ্যা ৬২। বিদ্যমান ব্যাংকগুলো পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার নতুন করে তিনটি ব্যাংক অনুমোদন দেওয়া হলো। এটি আসলে সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের জন্য সুখকর নয়। বরং এগুলো বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করবে। কারণ, দেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী ৩০ থেকে ৩৫টি ব্যাংক পরিচালনার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এখন ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২টিতে।
তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে একদিকে সূচক কমছে, অন্যদিকে প্রতিদিন গড় লেনদেনও কমে যাচ্ছে। যখন টার্নওভার কমে যায়, তখন স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের প্রতি এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর আগ্রহ বেড়ে যায়। এটি বিগত আট বছর ধরেই হচ্ছে। আরেক শ্রেণির স্টকহোল্ডার ওইসব বিনিয়োগকারীর বিপক্ষে কথা বলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপও নেওয়া হয়। বিশেষ করে মুন্নু সিরামিকস, মুন্নু স্টাফলার্সসহ কয়েকটি কোম্পানিকে স্পটে রাখা হয়। কিন্তু এসব কোম্পানি ভালো ইপিএস ও লভ্যাংশ দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন ওইসব কোম্পানিকে এখনও স্পটে রাখা হয়েছে। কারণ, স্বল্প মূলধনি কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনুৎসাহিত করা। কিন্তু মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে তাদের। আসলে এটি বিনিয়োগকারীদের বিপরীতমুখী পলিসি। এ ধরনের পলিসি ১৫ বছর আগেও দেখেছি; এখনও হচ্ছে। বিষয়গুলোর প্রতি বিএসইসির আরও সজাগ থাকা উচিত। যদি বিএসইসি তাদের স্বচ্ছতা বজায় না রাখে, তাহলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সর্বস্ব হারিয়ে ১৯৯৬ বা ২০১০ সালের মতো হবেন। তাই বাজারের সক্ষমতার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থায় নিয়োজিত কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা থাকতে হবে। আরেকটি দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, নতুন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বের মেয়াদ প্রায় দু’মাস হয়েছে। এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বসতে পারেননি।
এসএম নাসির উদ্দিন বলেন, সামগ্রিকভাবে পুঁজিবাজারে সেভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে না। নির্বাচনের পর যে প্রত্যাশা ছিল, তেমনটি হয়নি। তবে বিনিয়োগ হচ্ছে খুবই সামান্য। আবার বাজার নিম্নগতিতে থাকলে স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বেশি থাকে। যত দিন পর্যন্ত বাজারের গভীরতা বাড়বে না এবং ভালো কোম্পানি আসবে না, ততদিন বাজারের এ সমস্যা থেকে যাবে। পুঁজিবাজারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে হবে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। কারণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশি বিনিয়োগ আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সরকার পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে পুঁজিবাজার। তাই দেশের অর্থনীতির আরও উন্নয়ন করতে হলে আগে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ