Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:12 am

নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনা সাউথইস্ট ব্যাংকে!

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বেসরকারি খাতের সাউথইস্ট ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। সভায় নতুন চেয়ারম্যানসহ পর্ষদের গুরুত্বপূর্ণ পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আজই সিদ্ধান্ত হবে নতুন চেয়ারম্যান কে হচ্ছেন ১৮ বছরের পরিচিত মুখ আলমগীর কবির, নাকি অন্য কেউ। এ নিয়ে ব্যাংকপাড়ায় ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।

জানা গেছে, মূলত চেয়ারম্যান নিয়ে ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে। ১৮ বছর ধরে দায়িত্বপালনকারী আলমগীর কবির দৌড়ঝাঁপ করছেন চেয়ারটির দখল রাখতে। পাশাপাশি মিউচুয়াল গ্রুপের কর্ণধার আজিম উদ্দিন আহমেদ চেষ্টা করেছেন পদটি ফিরে পেতে। এছাড়া চলতি বছরে নতুন করে পর্ষদে থাকা চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ চমক লাগাতে পারেন।

অভিযোগ রয়েছে, আলমগীর কবির দীর্ঘ ১৮ বছর ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ১৮ বছরে তিনি অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা করে ব্যাংকটির সম্মান ক্ষুণœ করেছেন। পাশাপাশি চেয়ারম্যান পদ টিকিয়ে রাখতে সব ধরনের কূট কৌশল পরিপালন করেছেন, যার কারণে ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের কয়েকজন এখন শ্রীঘরে। এসব কারণে ব্যাংকটি এখন দুর্বল অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে নতুন নেতৃত্বে ব্যাংকটির ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় কাজ করছে একটি পক্ষ। 

এলাম, দেখলাম এবং জয় করলামÑএ ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এখন একটি পক্ষ পর্ষদের নেতৃত্বে আসতে চেষ্টা করছে। ব্যাংক সূত্রে জানায়, কে চেয়ারম্যান হবে, এখনও সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আজও হতে পারে বা কয়েক দিন দেরিও হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে ফোনকল ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে ব্যাংকটির সচিব একেএম নাজমুল হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শেয়ার বিজকে বলেন, এ বিষয়ে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। এজিএমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে, তাই কিছু বলতে পারছি না।

১৯৯৫ সালে বেসরকারি খাতে ব্যাংক স্থাপনের অনুমতি দেয়ার কিছু দিনের মধ্যেই যাত্রা শুরু হয় সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের। সেই সময় সরকারে ছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি। বেসরকারি এ ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ছিলেন এমএ কাশেম। ২০০০ সালে চেয়ারম্যান হন আবদুল্লাহ ইউসুফ হারুন। এরপর আবারও চেয়ারম্যান হন এমএ কাশেম। পরবর্তী সময়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান আজিম উদ্দীন আহমেদ ও রাগীব আলী। তাদের নেতৃত্বে সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। ২০০৪ সালে আলমগীর কবির ব্যাংকটির দায়িত্ব নেন।

ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সর্বশেষ ২০২১ হিসাববছরে ব্যাংকটি মোট ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর মধ্যে আট শতাংশ নগদ ও চার শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। সমাপ্ত হিসাববছরে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল এক টাকা ৮১ পয়সা। সে হিসাবে কোম্পানিটির সমাপ্ত হিসাববছরে মুনাফা কমেছে। এছাড়া ব্যাংকটি ২০২০ হিসাববছরে ১০ শতাংশ নগদ, ২০১৯ হিসাববছরে সাড়ে সাত শতাংশ নগদ ও আড়াই শতাংশ বোনাস এবং ২০১৮ হিসাববছরে শুধু ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। ব্যাংকটি ২০০০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে ব্যাংকটির শেয়ারসংখ্যা ১১৮ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২২টি। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন এক হাজার ১৮৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।