শেয়ার বিজ ডেস্ক: বরিশাল অঞ্চলের বিভিন্ন নদীর ভাঙন জনজীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে। এ বিষয়ে সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করেছেন বরিশাল অঞ্চলের মানুষ। এই দাবী উঠে আসে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এর পক্ষ থেকে আয়োজিত জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার: শিক্ষা, শোভন কর্মসংস্থান, জেন্ডার সমতা শীর্ষক আঞ্চলিক সংলাপে।
গত ২৪ মার্চ, বরিশালে জাতিসংঘ ডেমোক্রেসি ফাণ্ড (ইউএনডিইএফ) এবং সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক, খুলনা-এর সহযোগিতায় সিপিডি সংলাপটি আয়োজন করে।
এসময় বক্তারা বলেন, নির্বাচনের প্রাক্বালে রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহারের মাধ্যমে তাদের উন্নয়নের অঙ্গীকার করে। ইশতেহারে বর্ণিত অঙ্গীকারসমূহ যে কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এটিকে দল ও ভোটারদের মাঝে একটি লিখিত চুক্তি বলে ধরে নেওয়া যায়। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে “সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ” শিরোনামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ প্রকাশ করে। সংলাপে নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকার কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সভায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে বাবস্থাপনা একটি কঠিন বিষয়। করোনার আঘাতে এই সরকার অনেকদিন কাজ করতে পারেনি। তাই অনেক অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
নদী ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বর্ষার সময় আশেপাশের দেশ থেকে প্রায় ১.২ বিলিয়ন মেট্রিকটন পলি নেমে আসে যা একটি বিশাল সমস্যা। জনসংখ্যার চাপে আমাদের কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যাগুলোর বিষয়ে আন্তরিক। ৪০ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে ভ্যাক্সিন কেনার জন্য। এখন বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধীনে প্রায় ৮২ টি প্রকল্প চালু রয়েছে।
সংলাপের অতিথি বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি সাবেক সাংসদ টিপু সুলতান বলেন, আমরা যে যেখানে আছি সেখান থেকেই আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আগে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে তাহলেই রাজনীতি এবং দেশ সঠিক পথে পরিচালিত হবে। আমাদের বাহাত্তরের সংবিধানে ফেরত যেতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বরিশাল নদী ভাঙন এলাকা হলেও এখানে তেমন কোন পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না বলে তিনি জানান।
সংলাপের সভাপতি সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য দেওয়া ছিল। সেই লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের ওপরে তিনি জোর দেন।
সংলাপে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সম্পাদক ও ডি হাঙ্গার প্রোজেক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বদিউল আলম মজুমদার সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন। নির্বাচনী ইশতেহার একধরনের চুক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়বদ্ধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনী ইশতেহারের বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
সিপিডি’র সংলাপ ও যোগাযোগ বিভাগের যুগ্ম পরিচালক অভ্র ভট্টাচার্য সংলাপে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। উপস্থাপনায় তিনি বিভিন্ন সুচকে বরিশাল অঞ্চলের অবস্থা তুলে ধরেন। এছাড়াও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারের শিক্ষা, শোভন কর্মসংস্থান, জেন্ডার সমতা বিষয়ে বিভিন্ন অঙ্গীকার এবং অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, এই সংলাপের আগে বাংলাদেশের ৯০ টি স্থানে মুক্ত আলোচনা করা হয়, যেখানে প্রায় ৯১৮ জন উপস্থিত ছিলেন। তার উপস্থাপনায় বরিশাল অঞ্চলের মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের ইশতেহার সম্পর্কে মতামত এবং পরামর্শও তুলে ধরা হয়।
সংলাপে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, উন্নয়নকর্মী, উদ্যোক্তা, পেশাজীবী এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নদী ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী
