প্রতিনিধি, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। চলাচলের রাস্তা না থাকায় বসবাস করছেন না উপকারভোগীরা। এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেতে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন উপকারভোগীরা। উপজেলার ৬নং ভাদুরিয়া ইউনিয়নের তেঘড়া গ্রামের পাশে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি অবস্থিত।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) উপজেলার ৬নং ভাদুরিয়া ইউনিয়নের তেঘড়া গ্রামের পাশে ২৪টি পরিবারকে দুইকক্ষবিশিষ্ট পাকা ঘর, একটি বাথরুম, একটি রান্নাঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়। গত বছরের প্রথম ধাপে গরিব ও অসহায়দের বসবাসের জন্য এ ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। ভিডিও কনফারেন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ঘর প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করে উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করলেও চলাচলের রাস্তা না থাকায় ২৪টি পরিবারের মধ্য ৬টি পরিবার বসবাস করছে।
জানা গেছে, বাকি ১৮টি পরিবার আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করছেন না শুধুমাত্র চলাচলের রাস্তা না থাকার কারণে। দেড়-দুবছর পার হওয়ার পরও সেখানে বসবাস করছেন না তারা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীরা বলেন, গুচ্ছগ্রাম থেকে মূল সড়কে যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। এজন্য আমাদের ফসলি জমির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। প্রায়ই সেসব জমির মালিকরা আমাদের চলাচলে বাধা দেন ও গালমন্দ করেন। আবার বর্ষায় জমির আইল পানিতে ডুবে যায়, তাতে চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়। বাসা থেকে বের হওয়ার কোনো পরিবেশ থাকে না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আরেকজন জানান, রাস্তাঘাট না থাকায় অনেক দুর্ভোগে আমরা যেমন পড়েছি, ঠিক তেমনি দুর্ভোগে পড়ছি সন্ধ্যা হলেই বিভিন্ন এলাকা থেকে কিছু বখাটে এসে আমাদের এখানে নেশাদ্রব্য পান করে, যাতে আমাদের অনেক অসুবিধা হয়। চলাচলের রাস্তা না থাকার কারণে ঘরে উঠতে না পারা ব্যক্তির ঘরগুলোতে তালা ভেঙে বখাটের দল প্রবেশ করে নেশাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়Ñ যা এখানকার পরিবেশ নষ্ট করে। আমরা বাধা দিতে গেলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
ভাদুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আহসানুল কবির শামিম বলেন, বখাটেদের উৎপাতের বিষয়ে লোকমুখে শুনেছি; তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ শোম জানান, প্রথম ধাপে সরকারিভাবে ঘর বরাদ্দ ছিল, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। পরবর্তীতে কোনো বরাদ্দ এলে সেখানকার চলাচলের রাস্তার যে সমস্যা, তা সমাধানের চেষ্টা করা হবে এবং কেন উপকারভোগীরা ওখানে বসবাস করছেন না, তার সঠিক তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বখাটেদের উৎপাত, নেশা ও অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।