নিজস্ব প্রতিবেদক: নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতায় প্রায় ৩১০ মেগাওয়াট যোগ করতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। এ খাতে ১৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে সংস্থাটি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইআরডি সম্মেলন কক্ষে গতকাল এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যানড্যান চেন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের নতুন বাজার সম্প্রসারণে দি স্কেলিং-আপ রিনিউয়েবল এনার্জি প্রজেক্ট (্এসআরইপি) ইউটিলিটি-স্কেল সোলার ফোটোভোলটাইক (পিভি) এবং ছাদের বা রুফটপ পিভি স্থাপনে কাজ করছে। প্রকল্পটির আওতায় ফেনীতে দেশের প্রথম বৃহৎ পরিসরের ৫০ মেগাওয়াটের গ্রিড-টাইড সোলার পিভি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন করবে ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (ইজিজিবি)। দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের অভাব পূরণে প্রকল্পটি রুফটপ এবং ইউটিলিটি-স্কেল ও সোলার পিভি উভয় ক্ষেত্রেই অর্থায়ন সুবিধা দিতে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডকে (ইডকল) একটি ‘রিনিউয়েবল এনার্জি ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি’ চালাতে সাহায্য করবে। এটি ‘রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে (স্রেডা) বড় আকারের প্রকল্পের জন্য স্থান চিহ্নিত করতে এবং রুফটপ পিভির জন্য নতুন মিটারিং নীতি গ্রহণে উৎসাহিত করবে।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ড্যানড্যান চেন বলেন, ‘এক দশক ধরে বিশ্বব্যাংক নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎপ্রাপ্তি বাড়াতে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রয়েছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ কর্মসূচি, যা দেশের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষকে সেবা দিচ্ছে। আমরা এখন বাংলাদেশকে বৃহৎ পরিসরে নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন কার্যক্রম সম্প্রসারণে আরেক ধাপ এগিয়ে সহায়তা করতে যাচ্ছি। আশা করি, সরকারি ও বেসসকারি খাতের মধ্যে দৃঢ় সহযোগিতার মাধ্যমে এ প্রকল্প বাংলাদেশের জনগণের বর্ধিত বিদু্যুৎ চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে।’
প্রকল্পটি এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের দ্বার উšে§াচনে সহায়তা করবে এবং বেসরকারি খাত, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও অন্যান্য উৎস থেকে ২১ কোটি ২০ লাখ ডলার পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহের আশা করছে।
মনোয়ার আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া প্রকল্পটি প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করবে, যা প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশের নির্ধারিত লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।’
সাড়ে ১৮ কোটি ডলারের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের জলবায়ু বিনিয়োগ তহবিলগুলোর (সিআইএফ) কৌশলগত জলবায়ু তহবিলের (এসসিএফ) দুই কোটি ৬৩ লাখ ডলার ঋণ এবং ২৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার অনুদান রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) ঋণের মেয়াদ ৩০ বছর, যার মধ্যে গ্রেস পিরিয়ড পাঁচ বছর এবং দশমিক ৭৫% সার্ভিস চার্জসহ এর সুদহার এক দশমিক ২৫ শতাংশ। এসসিএফ ঋণের মেয়াদ ৪০ বছর, যার গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর এবং সার্ভিস চার্জ দশমিক এক শতাংশ।