নরসিংদীতে আমন ধানের বাম্পার ফলন

প্রীতিরঞ্জন সাহা, নরসিংদী: নরসিংদীতে চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়েও প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন আমন ধান অতিরিক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে বাম্পার ফলনে মুখে হাসি ফুটলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে কৃষকদের মধ্যে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেছে, এ বছর নরসিংদী জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ৪০ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ করা হয়েছে ৪০ হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমিতে। আমন ধানের মধ্যেÑব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৪৯ আবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে জেলার ৬টি উপজেলায় আমন ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ, আদিয়াবাদ, চরসুবুদ্ধি, হাইরমারা, নিলক্ষা, শ্রীনগর, বাঁশগাড়ী, পলাশ উপজেলার গজারিয়া, জিনারদী, চরসিন্দুর, শিবপুর উপজেলার দুলালপুর, মাছিমপুর, সাধারচর, জয়নগর, চক্রধা, মনোহরদী উপজেলার একদোয়ারিয়া, খিদিরপুর, কৃষ্ণপুর, চালাকচর, বেলাব উপজেলার আমলাব, বেলাব, চর উজিলাব এবং নরসিংদী সদর উপজেলার করিমপুর, নজরপুর, আলোকবালী, চরদিঘলদী, আমদিয়াসহ বিভন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দিগন্ত জোড়া মাঠ সোনালী ধানে ভরপুর। এসব এলাকার কৃষকরা বলেছেন, বেশি দামে সার, ডিজেল, কীটনাশকসহ ধান চাষে এবার অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বাজারে যে দামে ধান চাল বিক্রি হচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হবে। সরকার ধান-চালের যে দাম নির্ধারণ করেছে তাতেও পোষাণো কষ্টকর হবে।

চাষিরা জানায়, চলতি মৌসুমে বৈরী আবহাওয়া থাকায় সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়েছে। জমি তৈরি, চারা রোপণেও খরচ হয়েছে বেশি। সার কিনতে বেশি টাকা লেগেছে। তারপরও এবার ফলন ভালো হয়েছে।

রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের রহিমাবাদ গ্রামের কৃষক হারিছুল হক জানান, এবার সার ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে কৃষকদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়েছে। সেই সঙ্গে জমিতে সেচ ও কীটনাশকসহ অন্যান্য জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে কৃষকদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। এমনকি ধান রোপণ থেকে টাকা পর্যন্ত মজুরি বেড়েছে অনেক। ধান কাটতে একজন শ্রমিককে কমপক্ষে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা মজুরি দিতে হয়। অথচ ধান বিক্রি করে খরচ উঠছে না। সরকার প্রতি কেজি চাল ৪২ টাকা ও ধান ২৮ টাকা নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু তাতেও কৃষকদের লাভ হচ্ছে না।

নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ জানান, জেলায় ৪০ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার বেশি ৪০ হাজার ৯৮৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে, যা নরসিংদীবাসীর জন্য অত্যন্ত আশাতীত ফলন। এ ধান কাটায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষক। এর ফলে ১ লাখ ১১ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন সম্ভব হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০