Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 11:36 pm

নরসিংদীতে বেড়েছে শাকসবজির সরবরাহ, কমছে দাম

শরীফ ইকবাল রাসেল, নরসিংদী: নরসিংদীতে সবজির পাইকারি বাজারগুলোয় প্রতিদিনই বাড়ছে শীতকালীন শাকসবজির সরবরাহ। ফলে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের শাকসবজির দাম। এবার মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টির কারণে শীতের আগাম শাকসবজির আশাব্যঞ্জক ফলন না পেলেও এখন উৎপাদন বাড়তে শুরু করেছে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নরসিংদীর ছয়টি উপজেলায় শীতকালীন আগাম শাকসবজির আবাদ করেও অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষকরা। এতে সবজির বাজারগুলোয় সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে যায় শীতকালীন শাকসবজির। তবে অতিবৃষ্টির ক্ষতি কাটিয়ে দফায় দফায় চারা তৈরির পর এখন শাকসবজির উৎপাদন বাড়িয়েছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন বেড়েছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, লাউ, মুলা, শিম, ঢেঁড়স, মিষ্টিকুমড়া, বেগুনসহ অন্যান্য শীতকালীন সবজির।

জানা গেছে, শীতের শুরুতে পাইকারি বাজারগুলোয় তেমন সরবরাহ না থাকলেও এখন বাড়ছে সব ধরনের শাকসবজির সরবরাহ। জেলার পাইকারি সবজির বাজার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এসব

শাকসবজি। রাজধানীর চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ সবজি নরসিংদী জেলার বিভিন্ন হাটবাজার থেকে সরবরাহ করা হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এদিকে সবজির উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি সপ্তাহেই কমে আসছে সব ধরনের সবজির দাম। গত দুই সপ্তাহে সব ধরনের সবজি প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও পাইকারি ক্রেতারা। পুরোদমে সবজির উৎপাদন শুরু হলে দাম আরও কমে আসবে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ীরা।

শিবপুর উপজেলার পালপাড়া এলাকার কৃষক মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে শীতের আগাম সবজির ফলন না হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখন সব ধরনের সবজিই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সবজির উৎপাদন বাড়ায় দামও কমে আসছে।’

পলাশ উপজেলার মাঝেরচর গ্রামের তারা মিয়া বলেন, ‘এ বছর বৃষ্টির কারণে শীতের আগাম সবজি উৎপাদিত না হওয়ায় সবজি চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখন উৎপাদন বাড়ছে। তবে দাম যদি বেশি কমে যায় আবারও লোকসানে পড়তে হবে।’

এ বিষয়ে নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শোভন কুমার ধর বলেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সবজির পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হবে। আর তখনই দাম আরও সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। উৎপাদন কম হলে দাম বেশি পেলেও কৃষকরা লাভবান হতে পারেন না। আশাতীত ফলন পাওয়া গেলে দাম কিছুটা কম হলেও কৃষকরা লাভবান হবেন।’

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় শীতকালীন শাকসবজির আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৯ হাজার ৯৮৩ হেক্টর। এর মধ্যে আট হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।