নিজস্ব প্রতিবেদক: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ আত্মসাতের মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্যের করা আগাম জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে তাদের পুলিশে সোপর্দ করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলার এ চার আসামি হলেনÑবিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান ও মোহাম্মদ শাহজাহান। তাদের জামিন আবেদনের বিষয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার শুনানি হয় আদালতে। আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, এএফ হাসান আরিফ, ফিদা এম কামাল ও মিজান সাঈদ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে গত ৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীর করা এ মামলায় ট্রাস্টি বোর্ডের ওই চার সদস্য ছাড়াও চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালীকে আসামি করা হয়।
এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্তে¡ও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরে নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য ওই অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে আসামিরা মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন।’
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।