নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের (ডিএসই) একটি প্রতিনিধিদল পাটশিল্প খাতের কোম্পানি নর্দার্ন জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের কারখানা পরিদর্শন করে। মূলত নর্দার্ন জুটের বর্তমান কার্যকারিতা পরিদর্শনের জন্য গিয়েছিল ডিএসইর এই দলটি। তবে কারখানা প্রাঙ্গণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকায় কোম্পানির কারখানা প্রাঙ্গণে তারা প্রবেশ করতে পারেনি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে কোম্পানিটির সব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ রাখার কারণে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম দফায় কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানিটির সব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার কারণে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটি উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন ফাইল জমা দিয়েছিল। আর ২৫ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হয়। কিন্তু আদালত কোম্পানিকে অতিরিক্ত আরও কাগজপত্র জমা দিতে বলে এবং কোম্পানিটি সে অনুযায়ী সবকিছু জমা দিলে গত ১ মার্চ রিট পিটিশনের শুনানি হয় এবং কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ গত ১ মার্চ পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত ২০ জানুয়ারি থেকে উচ্চ আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানির সব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে রেখেছে। ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার কারণে কোম্পানিটি কোনো ধরনের কাঁচা পাট প্রক্রিয়াজাত করতে পারছে না এবং কোনো টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। এমনকি কোম্পানটি শ্রমিকদের মজুরিও পরিশোধ করতে পারছে না। এমন তথ্য ডিএসইতে প্রকাশিত হলেও এরপর আর কোনো তথ্য ডিএসইতে প্রকাশিত হয়নি।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ বা ৪০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২১২ টাকা ৮০ পয়সা, যার সমাপনী দরও ছিল একই। তবে দিনজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ২১২ টাকা ১০ পয়সা থেকে ২১৬ টাকার মধ্যে হাতবদল হয়। দিনভর মোট ৬ হাজার ৪৯৫টি শেয়ার মাত্র ১৩১ বার লেনদেন করে, যার বাজারদর প্রায় ১৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৯১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৩৫৬ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ১০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ২১ লাখ ৪২ হাজার শেয়ার রয়েছে। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে ১৫ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং বাকি ৮৪ দশমিক ৯১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ১১ টাকা ৩৩ পয়সা এবং ৩০ জুন, ২০২০ শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছিল ৮১ টাকা ৬৬ পয়সা। এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ১০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৩ টাকা ২৯ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা ৩৩ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ২২ টাকা ৬৬ পয়সা লোকসান। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান করে ১৭ টাকা ১৫ পয়সা আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৫৭ টাকা চার পয়সা। ওই সময় মোট লোকসান করে তিন কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা।