শেয়ার বিজ ডেস্ক : নাইজেরিয়ায় জ্বালানি ঘাটতি চরমে পৌঁছেছে। গত মঙ্গলবার দেশজুড়ে পেট্রল স্টেশনে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও পেট্রল মেলেনি অনেক স্টেশনে। এতে বড়দিনের উৎসব পালন ফিকে হয়ে গেছে অনেকের। খবর এএফপি।
গাড়ি করে বাড়ি যাচ্ছিলেন টোয়েজ আলেক। তিনি এএফপিকে জানান, ‘পেট্রল স্টেশন খোলা থাকলেও তাতে কোনো জ্বালানি নেই। আমার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পরিবারকে বড়দিনের উৎসবে সময় দিতে পারিনি। লাওজোর উত্তরে ওসুন প্রদেশে আমার বাড়ি যাওয়া থেকে বঞ্চিত হলাম।’
এদিকে অ্যালেক্স ওগনসোলা নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার বাচ্চাদের সমুদ্রসৈকতে নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পেট্রল পাইনি।’
নাইজেরিয়ান ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কোম্পানি (এনএনপিসি) জানায়, ১৯০ মিলিয়ন মানুষের জ্বালানি চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত সম্পদ নেই।
এনএনপিসির প্রধান মায়াতংকি বারু সোমবার একটি জাতীয় পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনকালে বলেন, সরকার জ্বালানির জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা করতে চাইলেও ভোক্তারা আগামী বছরের জন্য পাম্পে ডিজেল ও পেট্রল মজুত করে রেখেছে দাম বৃদ্ধির আশায়। এ জন্যই দেশজুড়ে এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
নাইজেরিয়া তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠনের (ওপেক) সদস্য এবং আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দরপতনের পর দেশটির অর্থনীতি ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো মন্দার কবলে পড়েছে। দেশটির মোট রাজস্ব আয়ের দুই-তৃতীয়াংশ আসে জ্বালানি তেল বিক্রি থেকে।
এছাড়া গত বছর বেশ কয়েকবার জঙ্গি হামলার কারণে দেশটিতে জ্বালানি তেল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এবং ডলারের ঘাটতি উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল আমদানিতে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। দেশটির হাউজিং, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানির দাম বেড়ে যায়।
গত বছরের অক্টোবরে নাইজেরিয়ায় বার্ষিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১৮ দশমিক তিন শতাংশে পৌঁছেছিল। ১১ বছরের মধ্যে ওই হার ছিল সর্বোচ্চ। ওই সময় টানা ১১ মাস দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি তেলের দরপতনে রাজস্ব আয় হ্রাস ও ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রা নাইরার মান ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ায় মন্দায় রয়েছে আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ নাইজেরিয়া। তবে এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করে যাচ্ছে দেশটি। এ লক্ষ্যে ২৩ বিলিয়ন ডলারের উচ্চভিলাষী বাজেট নিয়েছে নাইজেরিয়ার পার্লামেন্ট।
বাজেটে রেল, বন্দর ও বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়া অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন বাড়ানোর চিন্তাও করছে দেশটি। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক থেকে সম্ভাব্য ঋণ বড় ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।