ক্রীড়া প্রতিবেদক: ম্যাচটা ঠিক পেন্ডুলামের মতো দুলছে! রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিল সিটি ক্লাব। ম্যাচের শেষটাতে এসে লুকিয়ে ছিল রোমাঞ্চ। শেষমেশ দারুণ রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা ছড়াল রাজধানীর ইউল্যাব ক্রিকেট গ্রাউন্ডে, ঠিক শেষ বিকালে। তারপর অবশ্য জয় হলো অভিজ্ঞতার! শেষ হাসি ছিনিয়ে নিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। সিটি ক্লাবকে ২২ রানে হারিয়ে আরেকটি জয় তুলে নিল লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।
গতকাল রাজধানীর ইউল্যাব ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ম্যাচটি অবশ্য ঠিক সময়ে শুরু হতে পারেনি। আগের রাতের বৃষ্টিতে মাঠ প্রস্তুত হতে লেগেছে কিছুটা সময়। এ কারণেই ম্যাচ খেলানোর সিদ্ধান্ত হয় ৪০ ওভার করে। যেখানে টস ভাগ্য ছিল তলানিতে থাকা সিটি ক্লাবের পক্ষেই। কিন্তু টস জিতে তারা শুরুতে ব্যাট করতে পাঠায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে।
ব্যাটিং-এ নেমে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৪০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে করে ২২৫ রান। এরপর জবাব দিতে নেমে মাঝে সমান তালে লড়লেও লিজেন্ডসরাই মাঠ ছাড়ে হাসিমুখে। সিটি ক্লাব অলআউট হয় ৩৭.৫ ওভারে ২০৩ রানে। আর জয়ের ব্যবধানটা ২২ রানের।
এই জয়ে বড় অবদান অবশ্যই নাঈম ইসলামের। ক্যারিয়ারের সেরা সময়টাই যেন কাটাচ্ছেন তিনি। ব্যাট হাতে মাঠে নামলেই ফিফটি। শতরানও পেয়েছেন দুটি। সব মিলিয়ে এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে নাঈম ইসলাম রীতিমতো হয়ে উঠেছেন ‘রান মেশিন’। তারই আরেক ঝলক দেখা গেল গতকাল। সিটি ক্লাবের বিপক্ষে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের এই তারকা ফের ব্যাটে মাতালেন। ঈর্ষণীয় ফর্ম ধরে রেখে এ ম্যাচেও তুলে নিলেন আরেকটি ফিফটি। আর লিজেন্ডসরা পেয়ে গেল লিগে টানা তৃতীয় জয়। সব মিলিয়ে ৬ ম্যাচে চতুর্থ জয়।
ব্যাটে-বলে এদিন নাঈমকেও ছাড়িয়ে যান চিরাগ জানি। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এদিন পেলেন অর্ধশতক। লিজেন্ডসদের এই অলরাউন্ডার এরপর বল হাতে নেন ৪ উইকেট। যার ফলে ম্যাচের সেরা তো তিনিই।
এর আগে গত সোমবার রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে শতক তুলে নেন চিরাগ ও নাঈম। এখানেও দাপট ছিল দু’জনের। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নাঈমের ব্যাট থেকে এসেছে ৯১, ৯৫, ৯২, ১২৪, ১১৪*, ৫২। প্রতি ম্যাচেই ঝড়। এদিন ৫২ রান করতে খেলেন ৭৫ বল। চিরাগ ৫১ রান করেন ৬৪ বলে। শেষটাতে তানবির হায়দার ২৫ বলে করেন অপরাজিত ৩৪। দল পায় বড় পুঁজি।
জবাব দিতে নামা সিটি ক্লাবকে শুরুতে বিপাকে ফেলে দেয় রূপগঞ্জ। ২৪ রানেই সিটি ক্লাব হারায় ২ উইকেট। তারপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলেছেন লিজেন্ডসদের বোলাররা। মাঝে জাকিরুল আহমেদ জেম ও আশিক উল আলম নাঈম দাপট দেখান। দুজনেই তুলেছেন হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু রূপগঞ্জ বোলারদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে পেরে ওঠেননি সিটির ব্যাটসম্যানরা।
সিটি ক্লাবের জাকিরুল করেন ৫৬ রান। আর ৬২ রান আসে আশিকের ব্যাট থেকে। চিরাগ ২৮ রান খরচে নেন ৪ উইকেট। মেহেদী হাসান রানা দুটি, মাশরাফি বিন মর্তুজা, নাবিল সামাদ, আল আমিন হোসেন ও নাঈম ইসলাম নেন একটি করে উইকেট। সব মিলিয়ে টিম ওয়ার্কেই আরেকটি জয় ধরা দিল রূপগঞ্জের। এই ছন্দ ধরে রেখেই লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে চায় মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ২২৫/৯ (৪০.০ ওভারে)
সিটি ক্লাব: ২০৩/১০ (৩৭.৫ ওভারে)
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ২২ রানে জয়ী।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: চিরাগ জানি (লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ)।