তাপস কুমার, নাটোর: সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য অর্জনে অনলাইনে যাচ্ছে পল্লি দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) ক্ষুদ্র ও উদ্যোক্তা ঋণ কার্যক্রম। এ উপলক্ষে সম্প্রতি পিডিবিএফের নাটোর আঞ্চলিক কার্যালয়ে তিন জেলার ১২২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্যাব তুলে দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজ্জাকুল ইসলাম।
ট্যাব বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে সর কার। যে কোনো নাগরিক সেবা অনলাইনের আওতায় এলে কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়। পিডিবিএফের ঋণ বিতরণকারী ও ঋণগ্রহীতা উভয় পক্ষই অনলাইন কার্যক্রমের সুফল অর্জনে সক্ষম হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিডিবিএফ সম্প্রসারিত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মনারুল ইসলাম বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য পূরণে পিডিবিএফ সব সময় প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রম প্রচলনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিপূর্বে নাটোর আঞ্চলিক কার্যালয়ে স্থাপিত অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাবে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও এসএসসি পাস করা ঋণগ্রহীতাদের বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনার ফলে যে কোনো ঋণগ্রহীতা যে কোনো সময় তার ঋণ ও সঞ্চয়ের সর্বশেষ অবস্থান জানতে পারবেন। পাশাপাশি অফিসের মনিটরিং সহজ হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে যে কোনো অনিয়ম দূর হবে।
পিডিবিএফ নাটোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবদুল মালেক সভাপতির বক্তব্যে বলেন, পিডিবিএফের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা সারা দিনে তাদের ট্যাবে সংগৃহীত তথ্য দিনশেষে ওয়াইফাই সংযুক্ত উপজেলা কার্যালয়ের সফটওয়্যারে আপলোড করবেন।
পিডিবিএফ নাটোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের আওতায় নাটোর, রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জ জেলার ১৭টি উপজেলায় প্রান্তিক পর্যায়ে এক হাজার ৮২টি সমিতি গঠন করে এর ২৯ হাজার ২৫ সদস্যের মাঝে শতকরা পাঁচ ভাগ সার্ভিস চার্জে ৮৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, এক হাজার ৫২৩ উদ্যোক্তার মাঝে শতকরা সাড়ে ১২ ভাগ সার্ভিস চার্জে ৩৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া নাটোর জেলায় পিডিবিএফ চলতি অর্থবছর থেকে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক পর্যায়ে মাত্র সাড়ে তিন শতাংশ সার্ভিস চার্জে ৭৩ জনকে সাড়ে ২১ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে।
পিডিবিএফ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ড ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে। ঋণ সহায়তা ও পুঁজি গঠন ছাড়াও নারী উন্নয়ন এবং সুফলভোগী সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়ন, আয় বৃদ্ধি, সামাজিক উন্নয়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে।
পিডিবিএফ সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মনারুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের ২০ জেলার ১০০ উপজেলার দুই লাখ পাঁচ হাজার ২৫২টি গ্রামীণ পরিবারের প্রায় ১০ লাখ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, আয়বর্ধনমূলক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে পিডিবিএফ। দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে দেশকে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করতে পর্যায়ক্রমে সব কার্যালয়ের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমকে অনলাইন নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা হবে।