Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 9:46 pm

নানা কারণে পর্যটক কমেছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ: ঈদের ছুটিতে হবিগঞ্জের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠলেও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে পর্যটকের সংখ্যা কমেছে। উদ্যানের ভেতরে আপত্তিকর উপস্থিতি, নিরাপত্তাহীনতা আর অনুন্নত অবকাঠামোর কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন দর্শনার্থীরা। এছাড়া উদ্যানের মধ্য থেকে গত তিন মাসে চারটি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করায় অতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অনেক দর্শনার্থী। তবে উদ্যানের সার্বিক অবকাঠামোর উন্নয়নসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করলে দর্শনার্থী ফেরানো সম্ভব বলে অনেকে মনে করছেন।
জানা যায়, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে রয়েছে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী। ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ/সংশোধন আইনের আওতায় ২৪৩ হেক্টর জায়গা নিয়ে ২০০৫ সালে ‘সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর পর থেকেই বিভিন্ন দিবসসহ সব সময় দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে উদ্যানটি, কিন্তু নানা কারণে দিন দিন কমছে দর্শনার্থীর সংখ্যা।
এছাড়া গত ১০ বছরে একটি ওয়াচ টাওয়ার ও একটি ট্রি অ্যাডভেঞ্চার ছাড়া আর কোনো অবকাঠামো সেখানে গড়ে ওঠেনি। ময়লা ও আবর্জনার কারণেও নষ্ট হচ্ছে উদ্যানের পরিবেশ। এদিকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ভেতরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে আপত্তিকরভাবে সেখানে অবস্থান করছেন। ফলে পরিবার নিয়ে সেখানে যেতে অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে এক দর্শনার্থী মো. ইসমাঈল মিয়া বলেন, ‘আগে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে ঘুরতে আসতাম, কিন্তু বর্তমানে এর অবস্থা খুবই নাজুক। উদ্যানের ভেতরে ঘুরতে গেলে বিভিন্ন অশ্লীল দৃশ্য চোখে পড়ে, যে কারণে এখন ঘুরতে আসার পরিবেশ নেই।’
স্কুলশিক্ষিকা মনিরা বেগম বলেন, ‘এবার ঈদে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এলাম, কিন্তু এখানকার অবস্থা খুবই নাজুক। নিরাপত্তা নেই। যেখানে-সেখানে ময়লা ও আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা রুকন মিয়া বলেন, ‘ঈদসহ বিভিন্ন ছুটির দিনে এখানে দর্শনার্থীর ভিড়ে হাঁটা যেত না, কিন্তু এখন দর্শনার্থী আগের মতো আসেন না। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও পর্যটকদের জন্য থাকার সুবিধা নেই। এমনকি পানি খাওয়ার ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই।’
তবে স্টাফ সংকট ও সরকারি অর্থ বরাদ্দ না থাকায় পর্যটকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেন বন বিট কর্মকর্তা মো. আনিছুজ্জামান। তিনি বলেন, এখানে স্টাফ সংকট রয়েছে। নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় আমরা দর্শনার্থীদের গভীর জঙ্গলে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করি। খাবার পানির জন্য একটি পাম্পও বসানো হচ্ছে। সেখান থেকে লাশ উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘লাশগুলো গভীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে টিপরারা বসবাস করে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই।’