শেয়ার বিজ ডেস্ক : নর্থ আটলান্টিক ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (নাফটা) সংস্কার নিয়ে পর্যালোচনা চলছে অনেক দিন ধরেই। আলোচনার শেষের দিকে এসে চুক্তি নিয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর কর্মকর্তারা। সাত দফা আলোচনা ষষ্ঠ পর্ব শেষে কর্মকর্তারা যথেষ্ট আশাবাদী। আগামী মার্চে আলোচনা শেষ হবে। খবর বিবিসি।
কানাডার কুইবেকে আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথাইজার, কানাডার পররাষ্ট্রমন্¿ী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং মেক্সিকোর অর্থমন্¿ী ইলদেফনসো গুয়াহার্দো ইতিবাচক বার্তা দিলেন। তারা জানিয়েছেন, সামনের দফা আলোচনায় বসার জন্য যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।
ষষ্ঠ বৈঠকে গাড়ির ক্ষেত্রে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি মেটানো যায়, এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ উপায়গুলোকে সৃজনশীল বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এসবের মধ্যে আছে—সূর্যাস্ত ধারা, যাতে একটি পক্ষ চুক্তির পাঁচ বছর পর নিজেদের প্রত্যাহার করতে পারে এবং দ্বন্দ্ব সমাধানে বর্তমান পদ্ধতিতে বড় আকারের পরিবর্তন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এক দশমিক দুই ট্রিলিয়ন ডলারের এ চুক্তিটিকে একটি বিপর্যয় বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং ইউএস ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে মার্কিন নাগরিকদের কর্মসংস্থান বাড়াতে নাফটা চুক্তির নীতি পরিবর্তন করতে চেয়েছেন তিনি। বারবার তিনি জানিয়েছেন, চুক্তিতে পরিবর্তন না আনলে তার দেশকে এ চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেবেন।
১৯৯৩ সালে মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বৃত্ত বাণিজ্য ছিল এক দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার। আর ২০১৬ সালে তাদের ঘাটতি বাণিজ্য দাঁড়ায় ৫৫ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার। আর এ সময়ের মধ্যে কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে ঘাটতি বাণিজ্য দাঁড়ায় এক দশমিক দুই ট্রিলিয়ন ডলার। ফলে যুক্তরাষ্ট্র চাইছে নাফটার ১৯ নম্বর ধারা পরিবর্তন করতে, যা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
মেক্সিকো এ চুক্তিতে ডিজিটাল ট্রেড এবং শ্রমমান যোগ করতে চাইছে। আর কানাডা পরিবেশবান্ধব জলবায়ু চুক্তি ও শ্রমশক্তির ব্যাপারে জোর দিচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে প্যারিস অ্যাক্ট তথা জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ট্রাম্প আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য জলবায়ুর ব্যাপারে কানাডার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
নির্বাচনি প্রচারণার সময়কাল থেকে নাফটা চুক্তির নিন্দা জানিয়ে আসছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান হ্রাস, ম্যানুফ্যাকচারিং খাত ও অর্থনৈতিক পতনের জন্য ১৯৯৪ সালে স্বাক্ষরিত নাফটা দায়ী। চুক্তিটি কানাডা ও মেক্সিকোকে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করেছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। শপথ নিয়েই এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, নাফটা চুক্তি পুনরালোচনার বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন অঙ্গীকারবদ্ধ একাধিক দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে থাকায় এবং কম শ্রমিক খরচের কারণে রফতানি হাবে পরিণত হয়েছে লাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ মেক্সিকো। অনেক বিনিয়োগকারী এ দেশটির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত বাণিজ্যচুক্তি ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।