শেয়ার বিজ ডেস্ক : কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের একটি ‘সামরিক নৌযান’ দেখা যাওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে চলছে আলোচনা। তারা বলছেন, শুক্রবার সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত জাহাজটি সেখানে দেখে যায়, তারপর সেটি সরে যায়। আর তখন থেকেই শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে।
সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি শব্দ শোনা গিয়েছিল। কিন্তু বেলা ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পর পর ১০টির বেশি বিকট শব্দ আসে।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা সিদ্দিক আহমদ বলেন, নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের ওই ‘যুদ্ধজাহাজ’ দেখা যাওয়ার পর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ বেড়েছে।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সকালে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের জলসীমায় একটি বড় ধরনের জাহাজ দেখা গিয়েছিল। এটি যুদ্ধজাহাজ নাকি দেশটির অন্য কোনো জাহাজ; তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জাহাজটি দুপুরের আগেই সেখানে সরে গেছে। ‘কিন্তু জাহাজটি নাফ নদী সীমান্ত থেকে সরে যাওয়ার পরপরই মিয়ানমারের ওপার থেকে থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে।’
মিয়ানমারের বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে দেশটির জান্তা বাহিনীর লড়াই চলছে গত কয়েক মাস ধরে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও সেনাপোস্ট দখল করে ইতোমধ্যে সাফল্য দেখিয়েছে বিদ্রোহীরা।
সেনা ও বিদ্রোহীদের এই লড়াইয়ের প্রভাব পড়ছে সীমান্তের এপারের বাংলাদেশের মানুষের ওপরও। গত কয়েক মাসের মধ্যে ওপার থেকে ছুটে আসা গুলিতে দুই বাংলাদেশির প্রাণ গেছে; আহত হয়েছেন কয়েকজন। সীমান্তের এপারে কারও কারও ঘরবাড়িতে এসে পড়ছে গোলা। ফলে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘গোলাগুলি বা মর্টার শেলের শব্দ বৃহস্পতিবার একটু কমে এসেছিল। শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে তা আবার বেড়েছে। সকালে নাফ নদীর ওপারে যুদ্ধ জাহাজ দেখা গিয়েছিল, পরে সেটা চলে গেছে।’
টেকনাফ সদর ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এনামুল হক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। জুমার নামাজের পর আবারও গোলাগুলির বিকট শব্দ শোনা গেছে। এখনও থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে।’ দুপুরের পর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ বাড়ার কথা বলেছেন হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলীও।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, ‘মিয়ানমারের ভেতরে গোলার বিকট শব্দে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনও কাঁপছে। আজ (শুক্রবার) দুপুরের পর থেকে থেমে থেমে বিকট শব্দ হচ্ছে।’
বিজিবি কর্মকর্তা মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি সীমান্ত পরিস্থিতি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। সীমান্ত দিয়ে যে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশসহ উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বিডিনিউজ