ক্রীড়া ডেস্ক: টানা তিন ম্যাচ হারের পর অবশেষে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) গতকাল মঙ্গলবার জয়ের দেখা পেল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এদিন বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচে নাবিল সামাদের ঘূর্ণিতে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ১৪ রানে হারিয়েছে নাঈম ইসলামের দল।
বৃষ্টির কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে আনা হয় ১২ ওভারে। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রূপগঞ্জ করে ৬ উইকেটে ৮১ রান। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ২৪ রান করেন সানজামুল ইমলাম। পরে বল হাতে নাবিল সামাদের জাদুতে শাইনপুকুরকে নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ৬৭ রানে আটকে দেয় রূপগঞ্জ। এ কারণে দলটি এবারের লিগে প্রথম জয়ের দেখা পেল।
নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে মঙ্গলবার আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় রূপগঞ্জ; মেহেদী মারুফ সাজঘরে ফেরেন। সুমন খানের বলে ফেরেন তিনি। এদিকে রান পাননি আরেক ওপেনার আজমীরও। তানভীরের বলে ৯ বলে ৫ রান স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। এর কিছুক্ষণ পর কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকের আলীও। ৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লে সেখান থেকে সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন সাব্বির রহমান ও সানজামুল ইসলাম। তবে ম্যাচ ১২ ওভারের হলেও তারা ধীরগতির ব্যাটিং করেন।
পরে অবশ্য সানজামুল বেশ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেন। তবে সময় নিয়ে ব্যাট করেও দলকে বড় স্কোর এনে দিতে পারেননি সাব্বির। দলীয় ৪৮ রানে রবিউলের করা অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল স্কুপ করতে গিয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ২০ বলে ১৬ রান করেন তিনি। ওই ওভারে বিদায় নেন ১৭ বলে ২৪ রান করা সানজামুলও। শেষদিকে নাঈম ইসলাম ও সোহাগ গাজীর ব্যাটে ভর করে রূপগঞ্জ পায় লড়াইয়ের মোটামুটি পুঁজি। ১৩ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন নাঈম।
২০ রানে ৩ উইকেট নেন সুমন খান। ২টি উইকেট নেন রবিউল হক।
প্রতিপক্ষের সামনে ৮২ রানের লক্ষ্য দিয়ে বল হাতে শুরু থেকেই জ্বলে ওঠেন রূপগঞ্জের বোলাররা। এদিন প্রথম ওভারেই দলটিকে উইকেট এনে দেন নাবিল সামাদ। তার ঘূর্ণিতে ফেরেন তানজিদ হাসান। এর কিছুক্ষণ পর সাবেক ডিপিএল চ্যাম্পিয়নদের উইকেট উল্লাসে সেই নাবিল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে রবিউল ইসলাম রবিকে সাজঘরের পথ দেখান। ওই ওভারের পঞ্চম বলে তিনি তুলে নেন তৌহিদ হƒদয়কে। শাইনপুকুরের সামনে লক্ষ্যটা ৭২ বলে ৮২ রানের থাকলেও তিন ওভারে ৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কাজটা কঠিন হয়ে যায় ব্যাটসম্যানদের জন্য।
এদিকে ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শুরুতে সানজামুলের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন সাব্বির। ফলে ৫ রানেই চার উইকেট পড়ে চাপে পড়লে সেখান থেকে বের হতে পারেনি শাইনপুকুর। পরবর্তীকালে মাহিদুল অঙ্কন ও সুমন খান মিলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ারও চেষ্টা করেন। ততক্ষণে জয়ের আশা অনেকটাই শেষ হয়ে গেছে শাইনপুকুরের জন্য।
৭.৫ ওভারে শাইনপুকুরের পঞ্চম উইকেট তুলে নেয় রূপগঞ্জ। মুক্তার আলীর বলে আজমীরের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ১৬ বলে ১২ রান করা সুমন খান। শাইনপুকুরকে ধ্বংসস্তূপ থেকে একাই উদ্ধারের চেষ্টা করেন অঙ্কন। তবে তার চেষ্টা থামে দলীয় ৫৬ রানে। মুক্তারের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। ফেরার আগে ২৩ বলে ৩০ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১২ ওভারের ম্যাচে ৬ উইকেট হারিয়ে ৬৭ রান করে শাইনপুকুর।
রূপগঞ্জের হয়ে ২ ওভারে ১ রানের বিনিময়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন নাবিল সামাদ। এদিকে মুক্তার আলী নেন ১৪ রানে ২ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৮১/৬ (ওভার ১২), সানজামুল ২৪, নাঈম ১৮*; সুমন খান ৩/২০, রবিউল ২/৯।
শাইনপুকুর ৬৭/৬ (ওভার ১২), অঙ্কন ৩০, রবিউল ১৫*: নাবিল ৩/১, মুক্তার ২/১৪।
ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ১৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: নাবিল সামাদ।