‘নামের পাশে এফসিএ দেখতে চাওয়াটা ছিল আমার স্বপ্ন’

তানভীর হাসান এফসিএ, সিভিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানি সচিব। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্নের পর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পেশাগত ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) একজন সম্মানিত ফেলো। সম্প্রতি এক আলাপনে পেশাগত জীবনে তার সফল হয়ে ওঠা ও জীবনাচরণের বিভিন্ন দিক জানার চেষ্টা করেছেন হাসানুজ্জামান পিয়াস

ক্যারিয়ারের গল্প দিয়ে শুরু করতে চাই…
তানভীর হাসান এফসিএ: একটি সিএ (চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস) ফার্মে অডিট ম্যানেজার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করি। ওই প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন দায়িত্ব পালনের পর স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডে যোগ দিই। বছর দুয়েক কাজ করার পর ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডে হেড অব আইসিসি, ম্যানেজার পদে যোগদান করি। ক্যারিয়ারের একটা লম্বা সময় ওই প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। ২০১৬ সাল থেকে সিভিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানি সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।

পেশাগত ডিগ্রি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সিকে কেন বেছে নিলেন?
তানভীর হাসান এফসিএ: দেখুন, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। মা-বাবা আইনজীবী ছিলেন। আমার পরিবারের অধিকাংশই ডাক্তার অথবা আইনজীবী বা ব্যারিস্টার। বাণিজ্য নিয়ে পড়তে আমার খুব আগ্রহ ছিল কিন্তু পরিবারের আপত্তির কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত উচ্চতর গণিত, বিজ্ঞান নিয়ে পড়ি। রাজধানীর সিটি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট ভর্তির পরে সিএ নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়। চেয়েছি, এমন কোন পেশাগত ডিগ্রি দরকার যার মাধ্যমে সফল কর্মজীবন পার করতে পারি। এ কারণে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পেশাকে বেছে নিই। আরেকটা কথা না বললেই নয়, নামের পাশে এফসিএ দেখতে চাওয়াটা আমার একটা ছিল।

ফাইন্যান্স পেশার জন্য পেশাগত ডিগ্রির প্রয়োজনীয়তা কতটুক?
তানভীর হাসান এফসিএ: পেশাগত ডিগ্রির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটা আপনার অর্জিত জ্ঞানকে বাস্তবভিত্তিক প্রয়োগে সহায়তা করে। ফাইন্যান্স পেশার ক্ষেত্রে এটার প্রয়োগ আরও বেশি দেখা যায়। ধরুন, ফাইন্যান্স পেশায় আমরা যারা কর্মরত আছি সবাই কমবেশি কোনো বিজনেস প্রপোজালের আইআরআর ব্রেকইভেন অ্যানালাইসিস হরহামেশাই করে থাকি। পেশাগত ডিগ্রি থাকলে ফাইন্যান্স পেশার যে কোনো বিষয় দেখার দৃষ্টিভঙ্গিটা অন্তত বদলে যায়, এটা বলতে পারি।

ফাইন্যান্স পেশার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী?
তানভীর হাসান এফসিএ: কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক অবস্থা তুলে ধরতে হয় ফাইন্যান্স পেশাজীবীদের। পাশাপাশি নীতি-নৈতিকতা মেনে কাজ করে যাওয়াটাকে আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং মনে হয়। আজকাল বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটছে। সৎ, আদর্শবান ও নীতিবান হয়ে জীবনযাপন করতে পারাটাও অনেক চ্যালেঞ্জিং।

পেশা হিসেবে কোম্পানি সচিব ও সিএফওকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
তানভীর হাসান এফসিএ: যে কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ হলো, সিএফও ও কোম্পানি সচিব। শেয়ারহোল্ডার, ডিরেক্টর বা রেগুলেটর যারা আছেন তাদের সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত সময়মতো উপস্থাপন বা বোর্ডমিটিং, এজিএমগুলো সফলভাবে সম্পাদন করতে পারাটা কোম্পানি সচিবের গুরুত্বপূর্ণ কাজ। অন্যদিকে একজন সিএফওকে কোম্পানির প্রকৃত আর্থিক অবস্থান, ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ, বাজেট ভ্যারিয়েন্স অ্যানালাইসিস, অযথা খরচের রাশ টেনে ধরাসহ আরও অনেক কাজ করতে হয় কোম্পানির সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। কোম্পানি যদি মানব শরীর হয় সিএফও নিঃসন্দেহে কোম্পানির হার্ট হিসেবে বিবেচ্য হবে।

সফলতার জন্য কোন বিষয়গুলোকে আপনি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন?
তানভীর হাসান এফসিএ: সফলতার কোন শর্টকাট বা বিকল্প রাস্তা নেই। সবার আগে ইমান-আমল, সময়ানুবর্তিতা, কাজের প্রতি ভালোবাসা বা কমিটমেন্ট ও নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাই মানুষকে সফল করে তোলে।

যেসব তরুণ ফাইন্যান্স পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ…
তানভীর হাসান এফসিএ: আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন থাকা চাই। এ স্বপ্নটাই সামনে এগিয়ে দেবে তরুণদের। ফাইন্যান্স পেশায় সফল হতে হলে অবশ্যই কোনো না কোনো পেশাগত ডিগ্রি থাকতে হবে। এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সেটা সিএ, সিএমএ অথবা সিএফএ-ই হোক না কেন।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০