নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা শহর ও আশেপাশের এলাকায় যানজট নিরসনে ২০১৬ সালে সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (আরএসটিপি) অনুমোদন করে সরকার। এতে পাঁচটি মেট্রোরেল ও দুটি বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। এরই মধ্যে একটি মেট্রোরেল ও একটি বিআরটির নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুটি মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।
এবার দ্বিতীয় বিআরটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। ঢাকার পূর্বদিক দিয়ে প্রস্তাবিত এ বিআরটি নারায়ণগঞ্জ থেকে কাপাসিয়া পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। এজন্য শিগগিরই সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে।
সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এ অর্থ সরবরাহের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের যানজট নিরসন ও সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আরএসটিপি ২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট অনুমোদন করা হয়। এতে পাঁচটি মেট্রোরেল ও দুটি বিআরটি লাইন নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে একটি বিআরটি ও তিনটি মেট্রোরেলের কার্যক্রম চলছে। আর বিআরটি লাইন-৭-এর অ্যালাইনমেন্ট হলো ঢাকার ইস্টার্ন ফ্রিঞ্জ এলাকায় নারায়ণগঞ্জ থেকে কাপাসিয়া পর্যন্ত।
বিআরটি-৭ লাইনের এলাকা বরাবর বিভিন্ন বেসরকারি হাউজিং প্রকল্প গড়ে উঠছে। ফলে এর অ্যালাইনমেন্ট ও ডিপোর জমি সংরক্ষণের দরকার। এ লক্ষ্যে বিআরটি-৭-এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন প্রস্তুত করা হয়েছে। দ্রুত এটি অনুমোদনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আহাম্মদ শেয়ার বিজকে বলেন, ঢাকার পূর্বদিককে যুক্ত করতে বিআরটি-৭ লাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামী দিনের চাহিদা মাথায় রেখে এটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে আরএসটিপিতে। তবে ওই এলাকায় বিভিন্ন আবাসিক প্রকল্প গড়ে উঠছে। এতে ভবিষ্যতে জমি অধিগ্রহণ অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে অ্যালাইনমেন্ট চিহ্নিত এবং এজন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করা গেলে পরবর্তীতে দ্রুত ও কম ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা যাবে। এজন্য ডিটিসিএ কাজ করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, কাপাসিয়া থেকে পূর্বাচলের পাশ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রস্তাবিত বিআরটি-৭ লাইনের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার। জমি অধিগ্রহণ ছাড়া এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৬ কোটি ডলার বা দুই হাজার ১৩২ কোটি টাকা। বৈদেশিক সহায়তা বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে আরএসটিপিতে। এ বিআরটিতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ যাত্রী চলাচল করবে বলে ধরা হয়েছে।