‘নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সরকারের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। গতকাল ‘সহিংসতা মুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন অতিথিরা। একশনএইড বাংলাদেশ ওই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

আলোচকরা বলেন, সমাজের প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া নারী সহিংসতা বন্ধে শুধু সরকারের ওপর দায়িত্ব দিয়ে দিলেই হবে না। প্রয়োজন সবার আন্তরিক সহযোগিতা। কারণ সবার সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণ ছাড়া সরকারের একার পক্ষে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা সম্ভব নয়।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, অতীতে সিটি করপোরেশনে নারী ও শিশুবিষয়ক কোনো পৃথক কমিটি ছিল না। আমরা নতুন করে এবিষয়ক একটি কমিটি গঠন করেছি। মহাখালীতে নারীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)।

ওয়েবিনারে একশনএইড পরিচালিত বিভিন্ন সময়ের জরিপের তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় অপরাধ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ দায়ের করতে নারীরা অনিরাপদ বোধ করেন। বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ নারী মনে করেন অপরাধীকে দোষারোপ না করে বরং নারীকেই দোষারোপ করা হয়।

ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্যে একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড সদস্য এম নাসিমুল হাই বলেন, নারী নির্যাতনের বেশ কিছু ঘটনা আমাদের বিবেককে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে। আমরা আশা করব এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টোরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সমন্বিত চেষ্টা করতে হবে। এজন্য পাঁচটি ফেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হচ্ছে সরকারের সব পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সহযোগিতা, জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ও জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানো, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে তথ্য ও সহযোগিতা প্রদান, সুশীল সমাজের অন্তর্ভুক্তীকরণ যারা সমাজের কথাগুলোকে তোলে ধরেন ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ও সামাজে প্রভাবশালী ব্যক্তির সক্রিয় ভূমিকা পালন।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশি কবীর বলেন, প্রত্যেক জায়গায় নারীদের নিজের ওপর নিজের সাহস রাখতে হবে। নারীসহ সবাইকে সচেতন করতে হবে। ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা দুঃখজনক উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের সামাজিক মাইন্ড সেট যদি পরিবর্তন না করা যায়, তাহলে শুধু আইন দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা যাবে না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার নারীকে সামাজিক নিরাপত্তায় বলয়ের মধ্যে আনতে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল এ আসা কেসগুলোকে রেকর্ড রাখতে হবে এবং মনিটরিং ম্যাকানিজম তৈরি করতে হবে।

ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মমতাজ আরা বেগম। সমাপনী বক্তব্যে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, আমরা চাই আর কোনো নারী যাতে নির্যাতনের শিকার না হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০