ইউনিসেফ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ফিল্ড অফিসের প্রধান মাধুরী বন্দ্যোপাধ্যায় এই উদ্যোগের ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে পুরোপুরিভাবে মানা হয়েছে। এতে মানসম্পন্ন প্রারম্ভিক শৈশবকালীন শিক্ষা এবং বিকাশের সমঅধিকারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের সহায়তা দেওয়া, যাতে তারা ভবিষ্যতে আজীবন শিক্ষাগ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়। আমরা স্বাভাবিক বা জরুরি উভয় পরিস্থিতিতেই সব শিশুর জন্য প্রারম্ভিক শৈশবকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার পক্ষেও কাজ করছি।”
সাসটেইনেবল সোশ্যাল সার্ভিসেসের (এসএসএস) প্রজেক্ট ম্যানেজার জান ই আলম বলেন, এখন পর্যন্ত প্যাকেজ পাওয়া শিশু ও মা-বাবারা এর ব্যাপারে বেশ উৎসাহী। প্রাক-স্কুল কার্যক্রমের যে কোনো বাধাকে ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার ব্যাপারে উভয় সংস্থার উদ্দেশ্য অভিন্ন। এখন থেকে গৃহভিত্তিক পড়াশোনা অবশ্যই শিশুদের অব্যাহত সামগ্রিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রোমেল ও শ্যামলীর মতো মা-বাবা উদ্বিগ্ন: পাড়া কেন্দ্রগুলো দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকলে মেয়ে আগামী বছর স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। রোমেল বলেন, বাড়িতে আমাদের সন্তানকে সহায়তার সুযোগ পেয়ে আমরা খুব খুশি। তবে লকডাউনের সময় এটি আমাদের জন্য সহজ ছিল না। আমাদের আয় আগের তুলনায় কমে গেছে। আমাদের মাঝে সামাজিকভাবে দূরত্ব তৈরি হয়েছে এবং আমরা আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি।
ভাইরাসের ভয়ে ভীত নই: ২৭ বছর বয়সী দেবো লোখি চাকমার মতো শিক্ষকরা এ কর্মসূচির সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যদিও শুরুর দিকে এটি বাস্তবায়ন করা কিছুটা কঠিন ছিল, তবে মা-বাবা যখন দেখেছেন যে, এটি তাদের সন্তানদের জন্য বেশ সহায়ক, তখন তারা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
সবাই এখন বড় পরিবারের মতো। পরিবারের কাছে যাওয়ার আগে সব সতর্কতা অবলম্বন করে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখে, মাস্ক পরে এবং ঘন ঘন হাত ধোয়।
দেবো লোখি চাকমা বলেন, এই উদ্যোগ একেবারে নিখুঁত না হতে পারে, তবে পড়া, লেখা এবং গণিতের অপরিহার্য অংশগুলো এতে রয়েছে এবং এটি অন্তত কোনো উপায়ে শিশুদের পড়াশোনায় সম্পৃক্ত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে। একইসঙ্গে এটি আমাদের শিক্ষকদের প্রতি সপ্তাহে তাদের অগ্রগতি খতিয়ে দেখার সুযোগ করে দেয়।
ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে