Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 2:44 pm

নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: কয়েকদিন ধরেই দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের। মাছ, মাংস, মুরগি থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেলের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। যেখানে আগাম মৌসুমি সবজির আমদানি শুরু হওয়ায় দাম কমার কথা, সেখানে বাড়তি দামে দিশেহারা সাধারণ মানুষ।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শুক্রাবাদ কাঁচাবাজার, কলাবাগান, কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে দেখা যায়Ñমাছ-মাংস, শাকসবজিসহ সবকিছুর দামই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চাইছেন বিক্রেতারা। ছুটির দিন হওয়ার এসব বাজারে অন্যান্য দিনের তুলনায় মানুষজনের উপস্থিতিও ছিল বেশি।

এসব খুচরা বাজারে পেঁয়াজ, ডিমের দাম কিছুটা কমলেও আলু, টমেটো, বেগুন, করলা, পটোল, লাউ, কাঁচা পেঁপে, শসা, গাজর, ফুলকপি, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙ্গা, কচুর লতি, ঢেঁড়স, লাউশাক, পালংশাক, লালশাক, কলমি শাক, কচুশাকসহ সব ধরনের শাকসবজির দামই ছিল চড়া।

আগে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দামে বিক্রি হওয়া বেগুন দাম এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ আগে ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও আজ হয়েছে ১৪০ টাকা। রসুন কেজি প্রতি ১৩০-১৪০ টাকা যার পূর্বমূল্য ছিল ১২৫ টাকা। গোল আলুর দাম হয়েছে কেজিপ্রতি ২৫ টাকা যার আগের দাম ২০ টাকা।

এছাড়াও আজকের বাজারে আদা ১৩০-১৪০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, লাউ ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা কেজি, গাজর ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এসব সবজি মাত্র এক সপ্তাহ আগেও পাওয়া যেত ৫-১০ টাকা কমে। বাজারে লালশাক, পালংশাক, মুলাশাক আঁটিপ্রতি ১৫-২০ টাকা ও লাউশাক ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানগুলোতে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়।

কলাবাগান বাজারে সবজি বিক্রেতা হাফিজ উদ্দিন বলেন, পাইকারি সবজি কিনতে আমাদের অতিরিক্ত দাম দিতে হচ্ছে। সেই প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। তবে শীতের সবজির আমদানি বাড়লে দাম কমবে। এর আগ পর্যন্ত এই কয়েকদিন বাজার চড়া যাবে।

সবজির এমন ঊর্ধ্বমুখী দামে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। মরিয়ম জাহান নামের এক ক্রেতা বলেন ১৪০ টাকা দিয়ে এক কেজি মরিচ কিনতে হচ্ছে। ৫০-৬০ টাকার নিচে কোনো সবজিই নেই। আমরা সাধারণ মানুষ কীভাবে বাঁচব? বাজারে সবকিছুর দাম বেড়েছে ঠিকই কিন্তু আয় বাড়েনি।

অন্যদিকে গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতো থাকলেও ব্রয়লার মুরগির দাম পৌঁছেছে ১৮০ টাকায়। গরু ৬০০ টাকা, খাসির ৯০০-১০০০ টাকা, লেয়ার ২৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিম ৩৮-৪০ টাকা হালি বিক্রি হলেও এখন তা নেমেছে ৩৬ টাকায়।

স্বস্তি নেই মাছের বাজারেও। বাজারগুলোতে প্রতি কেজি রুই ৩৫০-৩৮০ টাকা, কাতলা ৩৪০-৩৫০ টাকা, পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকা, পাবদা ৫৫০-৬০০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, বড় তেলাপিয়া ১৯০-২০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৭০-১৯০ টাকা, গ্রাস কার্প ১৫০-১৭০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৭০০-৭৫০ টাকা ও শিং মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট কাচকি ৩৫০ টাকা ও মলা মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানগুলোতে সয়াবিন তেল ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা ডাল ৯৫-১০০ টাকা ও চিকন ডালের দাম ১০০-১১০ টাকা। চালের বাজার রয়েছে অপরিবর্তিত। নাজিরশাইল ৬৫-৭০ টাকা, মিনিকেট ৬০-৬৫ টাকা, ও আটাশ ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।