নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর হোন

সুপ্রাচীনকাল থেকে এ অঞ্চলের মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অনেক পরিবারের জমিতে উৎপাদিত ফসল দিয়ে জীবিকা চলে। তাদের উৎপাদিত ধান, মসলা এবং শাকসবজি দিয়ে খাদ্যের চাহিদা পূরণ হয়। কিন্তু কৃষকরা প্রায়ই ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যপক্ষে ভোক্তারা পণ্য চড়া মূল্যে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। মূলত মধ্যস্বত্বভোগীগের দৌরাত্ম্য ও বাজার ব্যবস্থায় চরম অব্যবস্থাপনা কৃষক এবং ভোক্তাদের ক্ষতির মুখে ফেলছে। গত কয়েক মাস ধরে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা চলছে, এখন শাকসবজির বাজারও লাগামহীন। উদ্ভ‚ত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও উদ্যোগী হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবতা দেখা যাচ্ছে উল্টো। সবমিলিয়ে কৃষক ও ভোক্তাদের ভোগান্তি বাড়ছে।

‘বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ কমছে না সবজির দাম’Ñশিরোনামে গতকালের দৈনিক শেয়ার বিজে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের দাম হঠাৎ কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে আবারও বাড়ছে। এছাড়া শীত মৌসুমে নানা ধরনের সবজি উৎপাদিত হলেও স্বস্তি দিচ্ছে না। বাজার ভরপুর থাকার পরও সবজির দাম বেশ চড়া। পেঁয়াজ নিয়ে দু-তিন মাস ধরে অস্থিরতা চলছে। বাজারের এমন লাগামহীন অবস্থায় দায় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না।

পেঁয়াজ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। গত বছর ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকায় পৌঁছায়। মাঝে দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসায় দাম কিছুটা কমলেও আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে এমনিতেই চরম ভোগান্তিতে রয়েছে ভোক্তারা, এখন শাকসবজির দাম বৃদ্ধি চাপ আরও বাড়াচ্ছে। অথচ দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে তারা ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিমত অনেকের। অভিযোগ উঠেছে, কার্যকর নজরদারি না থাকায় সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

খবরেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় দুই সপ্তাহ পেঁয়াজের দাম স্থির থাকলেও এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এমনিতে কৃষকরা পরিপক্ব হওয়ার আগেই পেঁয়াজ তোলায় সংকট তৈরি হয়েছে, যা দাম আরও বাড়াচ্ছে। অন্যদিকে শাকসবজির মূল্যবৃদ্ধি হলেও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই বিক্রেতাদের কাছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, নি¤œ ও মধ্যম আয়ের মানুষ প্রায়ই তিনবেলা খাবার নিশ্চিত হলেই খুশি থাকেন। কিন্তু তাদের চাহিদায় এভাবে টান পড়লে ভোগান্তির শেষ থাকে না। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হতে হবে। যারা কারসাজি কিংবা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। কৃষক এবং ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০