Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 2:22 pm

নিপাহ ভাইরাস থেকে সতর্ক থাকুন

দেশে ২০০১ সালে প্রথম নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সেই থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গেছে। নিপাহ ভাইরাস প্রাণীর দ্বারা দূষিত খাবার বা আক্রান্ত ব্যক্তি থেকেও ছড়াতে পারে। সাধারণত বাদুড় ও শূকর এ রোগ ছড়ায়।

নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ হলে কেউ কেউ উপসর্গহীন থাকতে পারে, কারও আবার শুধু সাধারণ জ্বর-কাশি দেখা দিতে পারে। তবে সবচেয়ে জটিল অবস্থা হলো যখন মস্তিষ্কে সংক্রমণ বা এনকাফালাইটিস দেখা দেয়। প্রথমে জ্বর, মাথা, গলা ও পেশি ব্যথা, বমি প্রভৃতি হয়। এনকাফালাইটিস হলে অসংলগ্ন কথাবার্তা, চেতনা বা জ্ঞান কমে আসা এবং নানা রকম স্নায়ুগত জটিলতা দেখা দিতে পারে। খিঁচুনি হতে পারে এবং ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগী অচেতন হয়ে যায় বা কোমায় চলে যায়। এ অবস্থা থেকে বেঁচে ফিরে আসা কঠিন। আবার কারও কারও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের কোনো কার্যকর চিকিৎসা বা প্রতিরোধী টিকা নেই। তাই সচেতনতাই একমাত্র মাধ্যম। খেজুর বা তালের রস কিছুতেই কাঁচা খাওয়া যাবে না। খেতে হলে আগে ফুটিয়ে নিতে হবে। তবে গুড় খাওয়া যাবে। সবচেয়ে ভালো হলো রস না খাওয়া। যারা রস সংগ্রহ করেন, তারা যেন সতর্ক থাকেন। কারণ হাঁড়ির আশপাশে বাদুড়ের লালা লেগে থাকতে পারে। মাস্ক পরতে হবে এবং রস সংগ্রহের পর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। যেকোনো ফল গাছ থেকে পেড়ে সরাসরি খাওয়া যাবে না। আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে, ছাল ছাড়িয়ে খাওয়া ভালো। আগে থেকে খাওয়া বা প্রাণীতে কাটা, কামড়ানো বা অর্ধেক খাওয়া ফল খাওয়া যাবে না। অসুস্থ প্রাণী ধরা, কাটা, জবাই করা বা প্রসেস করার সময় হাতে গ্লাভস ও মুখে মাস্ক পরা উচিত। যে এলাকায় প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, সেখানে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে এবং পরিচর্যাকারী মাস্ক পরবেন। রোগীর কফ, থুতু ও লালা ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলতে হবে বা বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলতে হবে। চিকিৎসকেরা যেকোনো সন্দেহজনক রোগী দেখা ও পরীক্ষা করার সময় মুখে মাস্ক পরবেন এবং এর আগে-পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন।

অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ