Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 4:53 am

নিবারণযোগ্য অন্ধত্ব প্রতিরোধে একসঙ্গে কাজ করবে চক্ষুচিকিৎসক সমিতি ও অরবিস

নিবারণযোগ্য অন্ধত্ব প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ চক্ষুচিকিৎসক সমিতি (ওএসবি) এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অরবিস ইন্টারন্যাশনাল। রাজধানীর গুলশানে মঙ্গলবার অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি অফিসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ সম্পর্কিত এক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।

ওএসবি মহাসচিব অধ্যাপক ডা. দীপক কুমার নাগ এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনির আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। ওএসবি সভাপতি অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সক্ষমতা বাড়াতে এ চুক্তির আওতায় একসঙ্গে কাজ করবে ওএসবি ও অরবিস ইন্টারন্যাশনাল এবং পাশাপাশি ওএসবি আগামী বছরের নভেম্বরে চট্টগ্রামে ১১তম ফ্লাইং আই হসপিটাল ট্রেনিং প্রোগ্রামের (উড়ন্ত চক্ষুহাসপাতাল প্রশিক্ষণ কার্যক্রম) আয়োজনে নেতৃত্ব দেবে।
এছাড়া এ দুটি সংস্থা অরবিস সাইবারসাইট রিসোর্স ব্যবহার করে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চক্ষুসেবার মান উন্নত করতে সহযোগিতামূলক নানা পদক্ষেপ নেবে এবং প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও গবেষণা পরিচালনার জন্য একাডেমিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে।

ওএসবি নির্বাহী কমিটির পক্ষে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুক্তি রানী মিত্র।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক নাজনীন চৌধুরী, সহযোগী পরিচালক ড. লুৎফুল হোসেন ও ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মির্জা মনবীরা সুলতানা ও এস এম মনিরুল আহসান এবং কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্পেশালিস্ট সাহস মোস্তাফিজ।
সরকারি হিসাব বলছে, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ও ৪৮ হাজার শিশু অন্ধ। পাশাপাশি ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ ছানি, প্রতিসরণ ত্রুটি, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, গ্লুকোমা ও কর্নিয়ার দাগ নিয়ে বসবাস করছে, যেগুলো নিবারণযোগ্য অন্ধত্বের সবচেয়ে বড় কারণ।

ওএসবি হলো চক্ষু বিশেষজ্ঞদের একটি জাতীয় পর্যায়ের প্ল্যাটফর্ম, যেটি অন্ধত্ব প্রতিরোধে কাজ করছে। চক্ষু সংক্রান্ত শিক্ষার অংশ হিসাবে এ সোসাইটি সারা বছর ধরে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কর্মসূচির আয়োজন করে, যেখান থেকে তরুণ চক্ষু বিশেষজ্ঞরা এ ক্ষেত্রের নতুন অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পারেন এবং ক্লিনিকাল দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। বার্ষিক ওএসবি সম্মলনে প্রতি বছর বাংলাদেশ ও বিদেশের বিপুল সংখ্যক চক্ষু বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন। এটি এশিয়ার এই অঞ্চলের চক্ষু বিশেষজ্ঞদের জন্য তাদের জ্ঞান ও ধারণা ভাগ করে নেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে।

অন্যদিকে অরবিস ইন্টারন্যাশনাল একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা যেটি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে নিরারণযোগ্য অন্ধত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এই সংস্থাটি স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে লাখ লাখ চক্ষুচিকিৎসক ও পেশাদারদের দৃষ্টি-রক্ষা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দিয়েছে৷

নিবারণযোগ্য অন্ধত্ব কমানোর লক্ষ্য নিয়ে অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে, তার উড়ন্ত চক্ষুহাসপাতাল কর্মসূচির মাধ্যমে। বাংলাদেশে অরবিসের দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালে। তারপর থেকে সংস্থাটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
নিবারণযোগ্য অন্ধত্ব কমাতে সার্বজনীন চক্ষুসেবার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার জন্য ন্যাশনাল আই কেয়ার প্লান (জাতীয় চক্ষু পরিচর্যা পরিকল্পনা) বাস্তবায়নে অরবিস সরকার ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গে অনেকগুলো কাজ করেছে যেগুলো বাংলাদেশের জন্য ছিল একেবারে প্রথম। বিজ্ঞপ্তি