নিম্ন রক্তচাপের কারণ ও প্রতিকার

শরীরে রক্তচাপ কমে গেলে দেখা দেয় নিম্ন রক্তচাপ। এর ইংরেজি রূপ ‘লো প্রেসার’। একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ ১২০/৮০ হয়ে থাকে। এর কম হলে নিম্নরক্তচাপ ও বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপ ধরা হয়। অনেকে উচ্চ রক্তচাপ হলে সচেতন হন বা চিকিৎসা করান; কিন্তু নিম্ন রক্তচাপ হলে তেমন গুরুত্ব দেন না। জেনে রাখা ভালো, রক্তচাপ বৃদ্ধি বা হ্রাস দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিম্ন রক্তচাপ দেখা দিলে সচেতন হতে হবে। নিম্ন রক্তচাপের কয়েকটি বিষয় জেনে নিতে পারেন:

কারণ

#            শরীরে পানিশূন্যতা হলে নিম্ন রক্তচাপ হয়

#            বারবার বমি হলে শরীরের তরল বের হয়ে যায়। এতে নিম্ন রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

#            অনিয়মিত খাওয়া। সময়মতো খাবার না খেলে কিংবা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার না খেলে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে

#            ম্যাল অ্যাবসরবশন বা হজমে সমস্যা থাকলেও নিম্ন রক্তচাপ সৃষ্টি হতে পারে

#            শরীরের সঙ্গে সহনীয় মাত্রায় পরিশ্রম করা উচিত। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে

#            কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হলে এটি শরীরে চেপে বসতে পারে

#            শরীরে হরমোনজনিত সমস্যায় হতে পারে

#            রক্তশূন্যতা হলে বা শারীরিকভাবে আঘাত পেলে কিংবা দুর্ঘটনার ফলে রক্তপাত ঘটলেও নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে

#            অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকে প্রেশার কমে যেতে পারে

#            অপরিমিত ঘুমের কারণে মাথা ঘোরা বা প্রেশার কমতে পারে

লক্ষণ

#            মাথা ঘোরা বা হালকা অনুভূত হওয়া। মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

#            বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা

#            হঠাৎ চোখে অন্ধকার বা ঝাপসা দেখা

#            শারীরিক বা মানসিক অবসাদগ্রস্ততা

#            কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা

#            ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বা হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া

#            তুলনামূলক বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া

#            অস্বাভাবিক দ্রুত হƒৎকম্পন, নাড়ি বা পালসের গতি বেড়ে গেলে বুঝতে হবে প্রেশার কমে গেছে

ক্ষতি

প্রেশার বেশি নেমে গেলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হƒৎপিণ্ড সঠিকভাবে রক্তপ্রবাহ করতে পারে না। ফলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

চিকিৎসা

নিম্ন রক্তচাপের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন। পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হলে খাবার স্যালাইন খাওয়া ভালো। এতে রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়। দীর্ঘমেয়াদি নি¤œ রক্তচাপ রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়; তাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

প্রাথমিক চিকিৎসা

#            নিম্ন রক্তচাপের রোগীরা অনেকক্ষণ একই স্থানে বসে বা শুয়ে থাকবেন না

#            অনেকক্ষণ বসে বা শুয়ে থাকার পর ওঠার সময় সাবধানে ধীরে ধীরে উঠুন

#            বেশিক্ষণ খালি পেটে থাকলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে। তাই পেট খালি রাখা যাবে না। দিন ও রাতে কয়েকবার হালকা খাবার খেতে পারেন

#            পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

যেসব খাবার রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখবে

কফি: হঠাৎ নিম্ন রক্তচাপ দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। এতে আপনার রক্তচাপ কিছুটা হলেও বাড়বে

স্যালাইন: লবণে রয়েছে সোডিয়াম, যা রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে। এজন্য প্রেশার কমে গেলে ওরস্যালাইন খাওয়া যেতে পারে

কিশমিশ: কিশমিশ একটি সুস্বাদু ও উপকারী খাবার। রক্তচাপে যাদের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য বিশেষ উপকারী এটি। প্রতিদিন কয়েকটি কিশমিশ খেতে পারেন

পুদিনা: পুদিনা পাতায় রয়েছে ভিটামিন ‘সি’, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও প্যান্টোথেনিক। এসব উপাদান দ্রুত রক্তচাপ স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি মানসিক অবসাদও দূর করে

মধু ও দুধ: দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়

ডিম: রক্তচাপ কমে গেলে ডিম খেতে পারেন। মুরগির চেয়ে হাঁসের ডিম এক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি উপকারী।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০