ডিএসইর সাপ্তাহিক চিত্র

নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতানৈক্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতায় বিনিয়োগকারীরা

শেখ আবু তালেব: পুঁজিবাজারের তিনটি ইস্যুতে একমত হতে পারেনি দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওপর। নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্বন্দ্বের বিষয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। আগের সপ্তাহের চেয়ে শেয়ার লেনদেন কমিয়েছে এক পঞ্চমাংশ। ফলে কমেছে বেশিরভাগ সিকিউরিটিজ ও ইউনিটের বাজার মূল্য।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেন তথ্য বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে এমন তথ্য।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহ শেষে দেখা গেছে, ডিএসইতে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে আগের সপ্তাহের চেয়ে। আলোচিত সপ্তাহে লেনদেন কমেছে ১৯ দশমিক ৯১ শতাংশ।

এ সময় ডিএসইতে মোট ৩৮২টি সিকিউরিটিজ ও ইউনিটের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর কমেছে ২৮২টির, বেড়েছে ৮৪টির, অপরিবর্তিত ছিল ১২টির ও শেয়ারদর পরিবর্তন হয়নি চারটির।

আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩০ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট। ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক কমেছে ১৫ দশমিক ২১ পয়েন্ট। এ সময় অবশ্য ডিএস৩০ সূচক ২৭ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়েছে। অবশ্য বাজার সংশ্লিষ্টদের একাংশ বলছেন, একটানা আট সপ্তাহ বৃদ্ধির পর গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারদর সংশোধন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এতেই শেয়ার বিক্রয় চাপে রয়েছে ডিএসই। এজন্য লেনদেন কমেছে কিছুটা। এজন্য গত সপ্তাহে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে ডিএসইর পুরো লেনদেনে।

আলোচিত সপ্তাহে শেয়ার বিক্রয় চাপের মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ওষুধ, প্রকৌশল খাতে আগ্রহী বেশি ছিল। এর মধ্যে আগের সপ্তাহের চেয়ে মুনাফা দেখা গেছে ভ্রমণ, জীবন বিমা, মিউচুয়াল ফান্ড, ট্যানারি ও সেবা খাতে। ২১টি খাতের মধ্যে ছয়টি খাত ছিল ইতিবাচক ধারায়। অবশিষ্টগুলো নেতিবাচক ধারায় ছিল।

সর্বোচ্চ লোকসান দেখা গেছে, প্রকৌশল খাতে ১২ শতাংশ। এ ছাড়া সিরামিকে চার দশমিক সাত, সাধারণ বিমায় তিন দশমিক পাঁচ, সিমেন্টে তিন দশমিক পাঁচ ও বস্ত্র খাতে দুই দশমিক ৯ শতাংশ লোকসান দেখা গেছে।

ডিএসইর তথ্য বলছে, শেয়ার বিক্রয় চাপে সপ্তাহ শেষে নেতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ করেছে ডিএসই। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ায় বাজার মূলধনও হারিয়েছে এ সময়। আগের সপ্তাহের চেয়ে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে বাজার মূলধন হারিয়েছে ১১ হাজার ৮৪৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

ডিএসইর মোট লেনদেনে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক এক শতাংশ অবদান রাখে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ওষুধ খাত ১১ দশমিক তিন, প্রকৌশল খাত ১০ দশমিক পাঁচ, বস্ত্র খাত ১০ দশমিক এক, ব্যাংক সাত দশমিক ৯ ও জ্বালানি খাত সাত দশমিক আট শতাংশ অবদান রাখে।

ডিএসইর লেনদেন তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে একক কোম্পানি হিসেবে শেয়ারের বাজার মূল্য বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। এ ছাড়া তালিকায় স্থান পায় আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও ফরচুন শুজ। অন্যদিকে শেয়ারদর হারানোর তালিকায় শীর্ষে ছিল ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, সাফকো স্পিনিং মিলস ও কাট্টলী টেক্সটাইল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০