নিয়মবহির্ভূতভাবে কাঁচা পাট মজুতের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান:বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিয়মবহির্ভূতভাবে কাঁচা পাট মজুতের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। গতকাল সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর অফিসে বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএ), বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের সঙ্গে আলোচনাকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ সময় গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাঁচা পাট মজুতের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে সরকার।

তিনি আরও বলেন, সম্প্র্রতি দেশে কাঁচা পাটের সংকট তৈরির কারণে পাটকলগুলো উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। এ জন্য লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাঁচা পাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত থেকে বিরত রাখা; ভিজা পাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ করা; বাজারে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কাঁচা পাটের ডিলার বা আড়তদাররা এক হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি সময় ধরে মজুত করতে পারবেন না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া চলতি পাট মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, পাট চাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহ সঠিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচ বছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানিনির্ভরতা আর থাকবে না। এ পাট মৌসুম থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে। ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচ বছরে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন এবং মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ও সহায়তা করার লক্ষ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান রয়েছে।

প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের অধীন তালিকাভুক্ত সব পাটচাষিকে বিনা খরচে উফশী জাতের পাটবীজ সার (ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপিও) এবং বালাইনাশকসহ কৃষি যন্ত্রপাতি দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৬৯৮ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। রপ্তানি আয়ে পাট খাত চামড়াকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুর রহমান, বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী, বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ নাসির উদ্দিনসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০