চঞ্চল রহমান: সন্ত্রাসবাদীদের কাণ্ডে গোটা বিশ্বেই আতঙ্ক ছড়িয়ে আছে। গত পরশু রক্তাক্ত হয়েছে স্পেনের বার্সেলোনা। লন্ডন, প্যারিস কোনো জায়গাই যেন নিরাপদ নয়। তাই তো অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে দারুণ সতর্ক বিসিবি। নিরাপত্তায় কোনো ধরনের ফাঁকফোকর রাখছে না তারা। এরই পথ ধরে শঙ্কা কাটিয়ে বেশ আগেই আলোর মুখ দেখছে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। গতকাল রাতেই ঢাকায় পা রাখার কথা অজি ক্রিকেট দলের। সব কিছু ঠিক থাকলে নির্ধারিত সময়েই বল গড়াবে মাঠে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সব প্রস্তুতিও সম্পূর্ণ
করেছে। অতীতের মতো এবারও ঘরের মাঠে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে নিরাপত্তাব্যবস্থায়, যা দেখে খুশি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
অস্ট্রেলিয়াকে নিñিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ এরই মধ্যে শেষ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নাশকতা এড়াতে পুরো সিরিজে তাদের সঙ্গে কাজ করবে সেনাবাহিনীও। জরুরি প্রয়োজনে ৩০ মিনিটের মধ্যে স্টেডিয়ামে আসার প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। এছাড়া খেলোয়াড় ও বিদেশি অতিথিদের আবাসনস্থল ও যাতায়াত রাস্তার নিরাপত্তাব্যবস্থা, রুফটপ ডিউটি, মোবাইল ডিউটি, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে দর্শকদের স্টেডিয়ামে প্রবেশ করানো, খেলোয়াড়দের যাতায়াতের রাস্তা যানজটমুক্ত রাখা, ভেন্যু ও হোটেলকেন্দ্রিক নিরাপত্তাব্যবস্থা।
দীর্ঘদিন পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। তাই তো এ সিরিজে বাড়তি নজর রাখছে বিসিবি। সফরকারী দলকে কেমন নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি? এ নিয়ে বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘গত বছর ইংল্যান্ডকে আমরা যেমন নিরাপত্তা দিয়েছিলাম, অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও তেমনটায় থাকবে। আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থায় আশ্বস্ত হয়েই তারা সফরে এসেছে। আশা করি ভালো একটি সিরিজ হবে।’
এদিকে গত বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়া সিরিজকে কেন্দ্র করে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মাঠে উপস্থিত থেকে যা দেখেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) নিরাপত্তাপ্রধান শন ক্যারল। পুরো মহড়ার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন সফরকারী দলের দুই কর্মকর্তা। নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট অজি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
এর আগে নিরাপত্তার অজুহাতে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া। একই কারণে ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও লাল-সবুজ দেশে দল পাঠায়নি অজিরা। তবে গত বছর ইংল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের পরই টনক নড়ে সিএ’র। এরপর কয়েক দফা দলটির নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দল এ দেশের নিরাপত্তা সরেজমিনে দেখে যান। অবশ্য নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে বেশ আগে থেকেই সতর্ক ছিল বিসিবি, যা দেখে সন্তুষ্ট সফরকারী দলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এরপরই দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় অজিরা।
দীর্ঘ ১১ বছর পর টেস্ট সিরিজে অংশ নিতে এরই মধ্যে গতকাল রাতেই ঢাকা এসে পৌঁছেছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। এ সফরে দুটি টেস্টের পাশাপাশি দুই দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচেও অংশ নেবে অজিরা। ২২ ও ২৩ আগস্ট প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে স্মিথরা। এর তিন দিন পর অর্থাৎ ২৭ আগস্ট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে লড়বে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি শুরু হবে ৪ সেপ্টেম্বর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।