নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিতে এসে ১৭৩ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়ে গেল মিয়ানমার

 

প্রতিনিধি, কক্সবাজার : মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন ১৭৩ বাংলাদেশি। গভীর সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমার প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘নেভাল শিপ চিন ডুইন’ জাহাজ থেকে বাংলাদেশিদের নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজ গতকাল কক্সবাজার শহরের নুনিয়ার ছড়া ঘাটে এসে পৌঁছে।

এর আগে গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল কক্সবাজার এসে পৌঁছে। প্রতিনিধিদলটি কক্সবাজার পৌঁছার পরপরই ঘাট থেকে গাড়িযোগে রওনা হয়েছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়। যেখানে বিজিবির অধীনে রয়েছেন বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৮৫ সদস্য। তাদের নিয়ে আজ মিয়ানমার ফেরত যাবে প্রতিনিধিদলটি।

বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। তিনি বলেন, বেলা ১টার দিকে ১৭৩ বাংলাদেশি ঘাটে এসে পৌঁছতে পারেন। তারা মিয়ানমারের কারাগারে ভিন্ন মেয়াদে সাজা শেষ করে সরকারের প্রচেষ্টায় ফিরছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজারের, ৩০ জন বান্দরবানের, সাতজন রাঙামাটির এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে রয়েছেন। ইতোমধ্যে ফেরত আসাদের অপেক্ষা ঘাটে ভিড় করছেন স্বজনরা।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফেরত আসা ব্যক্তিদের বিজিবি গ্রহণ করে পুলিশকে হস্তান্তর করবে। তারপর যাচাই-বাছাই শেষে স্ব স্ব থানার পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি করা হবে।

ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র বলছে, রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সফররত ‘মিয়ানমার নেভাল শিপ চিন ডুইন’ ১৭৩ বাংলাদেশিকে বহন করে মঙ্গলবারই যাত্রা করেছে। এর মধ্যে ১৪৪ জন কারাগারে পূর্ণ মেয়াদে সাজা ভোগ করেছেন। অপর ২৯ জন মিশনের প্রচেষ্টায় ক্ষমা পেয়ে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন।

মূলত বাংলাদেশিদের নিয়ে আসা মিয়ানমারের জাহাজটি বৃহস্পতিবার সকালেই বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ২৮৫ সদস্যকে নিয়ে ফেরত যাবে।

২৮৫ সদস্যকে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়ার জন্যই মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলটি নাইক্ষ্যংছড়ি গেছে।

জানা গেছে, গত ১৯ এপ্রিল একদিনে নতুন ২৪, ১৬ এপ্রিল ৬৪, ১৪ এপ্রিল ১৪, ৩০ মার্চ ৩ ও ১ মার্চ ১৭৭ জন মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এরও আগে ফেব্রুয়ারির শুরুতে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

প্রথম দফায় ফেরতের সময় ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ এবং সংশ্লিষ্টরা কথা বললেও এবার তা হচ্ছে না। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের গ্রহণ এবং ২৮৫ জনকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ করে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে। সেখানেও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশও সংরক্ষিত হতে পারে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০