নিরাপদ কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনায় নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘নিরাপদ কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনা: চকবাজার পরবর্তী প্রস্তুতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা গতকাল ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন।
স্বাগত বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে ব্যবহৃত কেমিক্যালের বাজার মূল্য প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার এবং প্রতি বছর কেমিক্যালের ব্যবহার প্রায় আট শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, পুরান ঢাকায় প্রায় ৮০০ প্রকারের কেমিক্যাল দ্রব্য বেচাকেনা হয়ে থাকে। নিমতলী ও চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, আমাদের রাসায়নিক পণ্যের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নিম্নমানের।
তিনি হাজারীবাগের ট্যানারিশিল্পের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক দ্রব্যাদির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তা পুরান ঢাকা থেকে অন্যত্র স্থানান্তর করা যেতে পারে। তিনি সরকার প্রস্তাবিত কেমিক্যাল পল্লির দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোরারোপ করেন। তিনি কেমিক্যাল ব্যবসায় সম্পৃক্তদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, পুরান ঢাকার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং এ এলাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা নিরাপদ করতে পারলে একদিকে যেমন জনগণের জানমাল নিরাপদে থাকবে, অন্যদিকে
ব্যবাস-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হবে।
তিনি বলেন, চকবাজারে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের পর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এ টাস্কফোর্সের পরিচালিত কার্যক্রমে বিশেষ করে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ ও নীতিমালা করা হবে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে ঢাকার অদূরে সিরাজদিখান এলাকায় বেজার মাধ্যমে ‘কেমিক্যাল পল্লী’ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন অগ্নিকাণ্ডসহ যে কোনো দুর্ঘটনা মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ, মহড়া এবং আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন একান্ত অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, বিশেষ করে কেমিক্যালজনিত অগ্নিকাণ্ড মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে ২০ সদস্যের একটি বিশেষ দল সর্বদা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তিনি পুরান ঢাকার বেশ কিছু জায়গায় ‘স্যাটেলাইট ফায়ার স্টেশন’ স্থাপন করা প্রয়োজন এবং এ এলাকায় ভূগর্ভস্থভাবে পর্যাপ্ত পানি মজুদ রাখার ওপর আহ্বান জানান।
সভায় ইঞ্জিনিয়ারিং রিসোর্স ইন্টারন্যাশনালের (ইআরআই) চিফ কেমিক্যাল ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।