Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 3:57 pm

নির্ধারিত খরচে কর্মী না পাঠালে মালয়েশিয়ার বাজার খুলবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, ‘আমি চাই না আগের মতো চার লাখ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ করে কর্মী মালয়েশিয়ায় যাবে আর জঙ্গলে লুকিয়ে বেড়াবে। আমরা ওই ধরনের কোনো চুক্তি করব না। আমাদের টার্গেট হলো, সরকার যে রেট ঠিক করে দেবে, সেই রেটেই মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের পাঠাতে হবে। আমি অন্যায়কে প্রশ্রয় দেব না। আমাদের এম্বাসি এ নিয়ে কাজ করছে। আমরা এখানে বসেও কাজ করছি।’

গতকাল মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস (আরবিএম) আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘সিন্ডিকেট আমাদের সমস্যা নয়। নির্ধারিত রেটে কর্মী মালয়েশিয়া যেতে না পারলে সেখানে আমি মার্কেট খুলতে রাজি নই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে নিশ্চিত করতে হবে যে শ্রমিকরা নির্ধারিত রেটে কীভাবে যেতে পারে। এটা হলো আমার প্রাইম টার্গেট। এই জায়গা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমি কিন্তু মার্কেট খুলতে রাজি নই। তা না হলে সব দায় আমার ওপর আসবে, সরকারের ওপর আসবে। শ্রমিকদের ওপর যে অতিরিক্ত টাকার চাপ ফেলা হয়, এটা যদি আমি গ্রহণ করি, তাহলে কিন্তু তাদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এটা সত্য যে, বিদেশগামী শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। কিন্তু সারা বিশ্বে কর্মী চাহিদার যে একটি পরিবর্তন এসেছে, এটা কিন্তু কেউ বলছে না। এখন চাহিদা হচ্ছে দক্ষ শ্রমিকের। দক্ষ শ্রমিক দিতে না পারলে কিন্তু ফেল করব আমরা। এজন্য আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা যখন লাখ লাখ কর্মী নিয়ে কথা বলি, আমাদের দক্ষ কর্মী কিন্তু হাজারে হাজারে। এখানে আমাদের আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। যে কয়টি মার্কেট খোলা হয়েছে এবং আমরা খোলার টার্গেট করেছি, আমাদের জন্য কিন্তু এখনও ডার্ক কনটিনেন্ট রয়ে গেছে। সেখানকার চাহিদাও আমরা যদি পূরণ করতে পারি, তাহলে আর কোনো দেশই লাগবে না।’

বাজার নিয়ে নতুন করে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমাদের দু-তিনটা বাজারে নতুন করে সংকট তৈরি হচ্ছে। যেমন: ইরাক ও লিবিয়াতে। ইরাকে মার্কিন হামলায় একটা সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাজার বন্ধ হচ্ছে না, আটকে আছে। আশা করছি, এতে আমাদের তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না, কারণ তারা প্রবাসী কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন আছে। আর লিবিয়া আমাদের বড় বাজার। তবে আমাদের ভুলের কারণে এ বাজারে প্রবেশ করতে কষ্ট হচ্ছে। লিবিয়াতে কর্মী গিয়ে চলে যায় ইতালি, গ্রিসসহ অন্যান্য দেশে। প্রথমেই আমরা কাজ করি বেআইনি। এতে অনেক কর্মী মারা যাচ্ছেন। আমি চাই না আমার দেশের কোনো কর্মী বিদেশে গিয়ে মৃত হয়ে দেশে ফিরে আসুক। আমি চাই দেশে সব কর্মক্ষম মানুষ বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পাক ও একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বানাক।’

নতুন বাজার নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক বাজার খুলেছি। আশা করছি লক্ষ্য অনুযায়ী আরও খুলতে পারব। আমরা শুধু আফ্রিকার দেশগুলোর চাহিদা পূরণ করতে পারলে আর কোনো দেশের তেমন প্রয়োজন হয় না।’

নারী কর্মীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবে নারী কর্মীদের নিরাপত্তায় আমরা এখন অনেক শক্ত অবস্থানে আছি। গত ডিসেম্বর মাসে একজন নারী কর্মীও দেশে ফেরেনি। বিদেশে নির্যাতিত হবে, এটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য বিদেশে কোটি টাকার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছর আমরা বিদেশে প্রবাসীদের জন্য পাঁচটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্কুল চালু করব। এর মধ্যে আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে গ্রিসের স্কুল চালু হয়ে যাবে। এছাড়া ব্রাসেলসেও আমরা জায়গা পেয়ে গেছি। সেখানেও স্কুলের কাজ চলছে।’