নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সপ্তাহে পবিত্র ঈদুল ফিতর। পবিত্র শবেকদর ও ঈদ উপলক্ষে ছুটি থাকায় আগামী সপ্তাহে ব্যাংক খোলা থাকবে মাত্র দুদিন। কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, ঈদ খরচ ও নগদ অর্থ কাছে রাখতে সবাই ব্যাংকমুখী হয়েছেন। এতে ব্যাংকগুলোয় উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। বাড়তি গ্রাহক চাপে ব্যাংকগুলোকেও অতিরিক্ত সময় সেবা দিতে হয়েছে।
কভিড-১৯ মহামারিতে সাধারণ ছুটি আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। জরুরি বিবেচনায় সীমিত পরিসরে ব্যাংকের শাখা খোলা রয়েছে। কিন্তু গতকাল থেকে ব্যাংক লেনদেন এক ঘণ্টা বাড়িয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার পরও গতকাল বেলা ২টায় লেনদেন শেষ করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। বেলা ২টায় যে গ্রাহক ব্যাংকে প্রবেশ করেছেন, তাকেও সেবা দিতে হয়েছে। এতে বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখা বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা ছিল।
গ্রাহকদের চাপে ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে সব শাখা খুলে দিয়েছে। গতকাল রাজধানীর মতিঝিল পাড়ায় সব ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বা টোকেন নিয়ে অপেক্ষা করতে হয় অর্থ উত্তোলনে। দুুপুরের দিকে ভিড় বাড়তে থাকলে এক ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় অর্থ পেতে।
ব্যাংকের শাখা থেকে গ্রাহকদের লাইন রাস্তা পর্যন্ত নেমে যেতে দেখা যায়।
অপরদিকে এ সময় এটিএম বুথগুলোয়ও ভিড় লক্ষ করা গেছে। কয়েকটি বুথে গ্রাহকদের উপস্থিতিতেই লকারে নগদ টাকা ভরতে হয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তাদের।
গতকাল ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অর্থ উত্তোলন করতে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী রাসেল সর্দার। তিনি জানান, ঈদের বাকি এখনও সাত দিন। কিন্তু ব্যাংক খোলা থাকবে মাত্র দুই দিন। এ কারণে ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছেন। হাতে তো টাকা রাখা লাগবে। আবার কর্মচারীদের পাওনা দিতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংক থেকে নতুন টাকাও নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ঈদুল ফিতরের আগে আর মাত্র দুদিন ব্যাংক খোলা। আগামী রোববার ও মঙ্গলবার ব্যাংকে লেনদেন করা যাবে। ১৪ তারিখে যদি ঈদ হয়, তাহলে বুধবার (১৩ মে) কেবল পোশাকশিল্প ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট লেনদেন হয়, অর্থাৎ শিল্প এলাকায় অবস্থিত ব্যাংক শাখা খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত ব্যাংক শাখা ১০ মে এবং ১৪ মে ঈদ সাপেক্ষে ১৩ মে খোলা রাখতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ ও দায় মেটানোর জন্য এটি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিবারের মতো এবারও এ সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, আজ শুক্রবার ৭ মে থেকে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত ৯ দিনের মধ্যে আগামী রোববার (৯ মে) ব্যাংক খোলা। পরদিন সোমবার (১০ মে) পবিত্র শবে কদরের ছুটি। এরপর ঈদের আগে মঙ্গলবার (১১ মে) ব্যাংক খোলা থাকবে। এছাড়া বাকি সাত দিন ব্যাংক বন্ধ।
এদিকে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনকালে সীমিত আকারে উপজেলা শহরের শাখাগুলো সপ্তাহে তিন দিন বন্ধ ও তিন দিন খোলা থাকছে। ব্যাংক খোলা-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংকের উপজেলা শহরের একটি শাখা খোলা থাকবে রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার। ফলে যেসব উপজেলায় গার্মেন্ট কারখানা নেই, সেসব উপজেলায় ঈদের আগে মাত্র দুদিন ব্যাংক খোলা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, ঈদের ছুটিতে ব্যাংক বন্ধ থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্ম এলাকায় থাকতে হবে।