নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেয়া হোক

নির্বাচনী ইশতেহার হচ্ছে জনগণের প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের প্রদত্ত নানা প্রতিশ্রুতির সমাহার। ক্ষমতায় গিয়ে সরকার গঠনের পর ইশতেহার কতটা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা। কাজেই নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে একটি রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ মনোযোগী হওয়া আবশ্যক।

দৈনিক শেয়ার বিজে গতকাল ‘বিআইডিএসের সেমিনারে বক্তারা: নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের হার মনিটরিং করতে হবে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, বিআইডিএস আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা ইশতেহারের কার্যকর বাস্তবায়ন এবং কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে তা মনিটরিংয়ের তাগিদ দেন।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যে দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছিল, সেখানে তারা মোট ১১টি অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে সর্বপ্রথমেই রয়েছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কর্মসংস্থান। এছাড়া শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কাজে লাগানো, প্রযুক্তিকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করাসহ নানা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব লক্ষ্যমাত্রা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, তা নিয়মিতভাবে পরিবীক্ষণের তাগিদ দিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহল। বিশেষজ্ঞ মহলের এ পরামর্শ আমলে নিয়ে ইশতেহার বাস্তবায়নে কতটা অগ্রগতি হলো, তা পরিবীক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক।

ইশতেহার বাস্তবায়ন সম্পন্নের জন্য সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিগুলো সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক। সেটা করা হলে ইশতেহারের লক্ষ্যমাত্রাগুলো বাস্তবায়ন সহজতর হবে। কারণ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এক ধরনের মনিটরিং হয়। বিশেষ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্যবর্তী পর্যায়ে এটির একটি মূল্যায়ন হয়। তাছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণের জন্য একটি উন্নয়ন ফল কাঠামো বা ডিআরএফ রয়েছে। এই ডিআরএফ হচ্ছে একটি মাপকাঠি, যার মাধ্যমে পরিকল্পনাটি কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে যে বিষয়ে মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়।

বর্তমানে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে সরকার। এ পরিকল্পনার মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে। তার আগেই নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এরই মধ্যে নবম পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। কাজেই সরকারের ইশতেহারের ঘোষণা ও প্রতিশ্রুতিগুলো পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে এখনই উপযুক্ত সময়। পরিকল্পনায় বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি প্রতি বছরের বাজেটে যাতে এ বিষয়গুলোর প্রতিফলন ঘটে, সে বিষয়টিও লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ স্বল্পমেয়াদে সরকারের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রধান মাধ্যমই হচ্ছে বাজেট। কাজেই ইশতেহারকে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করে তোলার পাশাপাশি বাজেটেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল এ কাজ সম্পাদনে দায়িত্বশীল হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০