Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 10:14 pm

‘নির্বাচনী সহিংসতার দায় ইসির নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন শেষে নির্বাচন কমিশন সচিব (ইসি) মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, নির্বাচনী সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের দায় নির্বাচন কমিশনের নয়। এর দায় প্রার্থী ও তাদের অনুসারীদের। গতকাল তিনি নির্বাচন ভবনে এ প্রতিক্রিয়া জানান।

তিনি বলেন, আমরা তো মনে করি খুব ভালো নির্বাচন হয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে ভোটের আগের রাত থেকে অন্তত পাঁচজন সহিংসতায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও জামালপুরসহ বিভিন্ন জেলায় সহিংসতায় অন্তত ৩০ জনের মতো আহত হয়েছেন। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান ইসি সচিব।

হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘এত বড় নির্বাচন। ৮৪৫টি ইউনিয়নে ভোট হলো। আমরা তো মনে করি খুব ভালো ইলেকশন হয়েছে। দু-একটি ঘটনা, যেমন যে যে জায়গায় ঘটনা ঘটেছে, সেখানে কেন্দ্রগুলো আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। ছয়টা জায়গায় আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, সেই ছয়টা জায়গায় কেন্দ্রেই ভোট বন্ধ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নরসিংদীতে, রায়পুরাতে দেখেছি সকালবেলা প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মারা গেলেন। আরেকটি ঘটনাতেও প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে ইমোশনাল হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করে, একপর্যায়ে একটি ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ যতগুলো ঘটনা ঘটেছে এভাবেই ঘটেছে। নিঃসন্দেহে এটা খুব দুঃখজনক। কিন্তু এত বড় নির্বাচন, আমরা যদি গত ২০১৬ সালের সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে এটি কোনো ব্যাপারই… মানে তুলনাই করতে পারেন না। অনেক কম, অনেক কম।’

ইসি সচিব বলেন, ‘আমাদের বিষয়টি হলো, একটি জীবনও যাতে না যায়। এটি হলো আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা। এটি আমরা মনে করি পরবর্তী যে নির্বাচন হবে, যারা প্রার্থী আছে, প্রার্থীর অনুসারী আছে এবং অন্যান্য সেবাগ্রহীতা যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, সবাই সহনশীল হবেন। আমরা মনে করি পরবর্তীকালে আরও ভালো নির্বাচন হবে। হতাহতের ঘটনা আরও কম ঘটবে। পরবর্তী নির্বাচনে যে যে জায়গায় ত্রুটি হচ্ছে, সেটা তো আমরা ধরতে পাচ্ছি এবং আমরা আরও কঠোর হব এবং ভালো নির্বাচন হবে।’

ইসি সঠিক ভূমিকা নিলে সহিংসতা এড়ানো যেত বলে অনেকে মনে করছেন, এক্ষেত্রে আপনারা দায় নেবেন কি নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘এই দায় অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের নয়। এই দায়টি হলো, যারা প্রার্থী, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, আমি বলব যে তারা তাদের অনুসারীদের দায় এটা। ধরুন, এই যে একটি ঘটনা ঘটল, অভিযোগ হলো, আমরা কিন্তু তদন্তে দিই। প্রতিবেদন এলেই কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনারা দেখবেন, এই যে শরীয়তপুরে আমরা দেখেছি সব প্রার্থীকে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে বলেছে যে, শুধু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতবে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছি। তদন্ত করে দেখেছি। এটি সত্য বলে প্রতীয়মান হওয়ার সেই ইউপির তফসিলই আমরা বাতিল করে দিয়েছি। নতুন করে আবার নির্বাচন হবে। অর্থাৎ যেই যেই জায়গাতে সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, সেগুলোর ওপর কমিশন কিন্তু তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে।’

গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করে ইসি। এরই মধ্যে প্রথম ধাপে ৩৬৯টি ইউপি ভোট হয়েছে। তৃতীয় ধাপে আগামী ২৮ নভেম্বর এক হাজার তিনটি ইউপির ভোট হবে। চতুর্থ ধাপে ৮৪০টি ইউপিতে ভোট হবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর।