প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুর সিটিতে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ মে। ইতোমধ্যে এই নির্বাচনে মেয়র পদে ১২ জনের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল।
এদিকে শেষ দিনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে এসে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণটা নির্বাচনে নিশ্চিত হবে। আমার শক্তি জনগণ। আমি কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। নৌকার পক্ষে জনতা আছে, তাই আমি নৌকার প্রতিপক্ষ কাউকে মনে করি না।’
সিটি করপোরেশনের সাবেক (বরখাস্ত) মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিক্রিয়ায় আজমত উল্লাহ খান বলেন, ‘উনি নমিনেশন পেপার ক্রয় করেছেন এটা আমি পত্রিকায় দেখেছি এবং উনার মা-ও খরিদ করেছেন। উনি যেহেতু আওয়ামী লীগের কাছে মনোনয়ন চেয়েছেন আমি বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের প্রতি যদি উনার আস্থা থাকে, দেশের উন্নতির প্রতি যদি উনার আস্থা থাকে তাহলে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে উনি উনার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।’
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেনÑগাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল হাদী শামীমসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে শেষ সময়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে এসে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নির্বাচন আইনে একজন নাগরিক হিসেবে আমি মনোনয়ন জমা দিয়েছি। ১৮ মাসের মিথ্যার দায় থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই। আমি জানি আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হতে পারে। কিন্তু আমি আমার মায়ের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। আমার জীবন থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। কিন্তু আমার মা আছে, আমি চাই আমার মা সুস্থ থাক, ভালো থাক। আমি ১৮ মাস মিথ্যার দায় বহন করছি। এটা থেকে আমি মুক্তি পেতে চাই।
গতকাল বেলা ৩টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র জমা দেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তার মা ছিলেন না। পরে তারই উপস্থিতিতে তার পক্ষে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন তার সঙ্গে আসা গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য আসকর আলী, সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এবং সাবেক গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদির।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান জানান, নির্বাচনের ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণের জন্য ৪৭৮টি ভোট কেন্দ্র, ৩ হাজার ৪৯১টি ভোট কক্ষ এবং ৪৮৬টি অস্থায়ী ভোট কক্ষ থাকবে। এ নির্বাচনে ৪৭৮ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৩ হাজার ৪৯১ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, ৬ হাজার ৯৮২ জন পোলিং অফিসার থাকবে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাই, ৮ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ৯ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আগামী ২৫ মে ইভিএমের মাধ্যমে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।