নির্বাচন কমিশনে বিএনপির ১০ অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বিএনপি। এতে ১০টি অভিযোগ করা হয়েছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রটি গতকাল বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জমা দিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার কাছে তিনি অভিযোগপত্রটি জমা দেন।

অভিযোগ জমা দিতে এসে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালে সকালে প্রধানমন্ত্রী একজন মেয়র প্রার্থীকে পাশে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য উনার প্রার্থীর পক্ষে, এটা শুধু নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ নয়, দেশের জন্য খারাপ একটি উদাহরণ। দেশের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে এভাবে যদি নির্বাচনকে প্রভাবিত করা হয়, এরপর আর কিছু থাকে না। প্রার্থীকে পাশে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন ভোট চান, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্টরা যে মেসেজ পাচ্ছে, তাতে তাদের হাতে কিছু থাকে না, সংশ্লিষ্ট কারও কোনো ভ‚মিকা রাখার সুযোগ নেই। তারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।’

ইভিএম বিতর্ক তুলে আমীর খসরু আরও বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে বিতর্ক এমন এক জায়গায় এসে পৌঁছেছে যে, কেউ আর ভোট দিতে আসছে না। সত্যি কথা বলতে কি, মানুষের মনে একটা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর অনাস্থা সৃষ্টি করতে ইভিএম একটি বড় ভ‚মিকা রাখছে। সেটা আজ প্রমাণ হয়েছে যে, এক শতাংশ ভোট দেওয়ার ক্ষমতা প্রিসাইডিং অফিসারের রয়েছে। যাদের আঙ্গুলের ছাপ মিলবে না তাদের ভোট দেওয়ানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে প্রিসাইডিং অফিসারকে। কিন্তু সেটি আজ খুলে দেওয়া হয়েছে। ইভিএম ব্যবহারের পেছনে একটি অসৎ উদ্দেশ্য ছিল, সেটি আজ প্রমাণ হয়েছে। চট্টগ্রামের উপনির্বাচন ছিল পাইলট প্রকল্প, আজ পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে।’

‘আঙুলের ছাপ নিয়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে’ অভিযোগ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ধর্ষণের ভয় দেখিয়ের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ এজেন্টকে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকদের যে পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়ার কথা ছিল, তা দেওয়া হয়নি। সাংবাদিকদের অপমান-অপদস্থ করা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে। অস্ত্রের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কয়দিন ধরে শুনে আসছি, যারা ঢাকার ভোটার নন, তারা ঢাকায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু এসেছেন তাদের বলা হয়েছে, বের হওয়ার জন্য। যদি বের না হোন, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে শত শত বহিরাগত রয়েছে। আপনারাও দেখেছেন। সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসী নিয়ে ঢাকায় ভর্তি করা হয়েছে। বহিরাগতরা আওয়ামী লীগের ব্যাচ ব্যবহার করে দাঁড়িয়ে আছে। পাড়া-মহল্লায় সন্ত্রাসীরা ভয় দেখিয়েছে। অনেক কেন্দ্রে দেখা গেছে, ইভিএম মেশিনে ধানের শীষের প্রতীক পাওয়া যায়নি। অনেক ইভিএম নষ্ট। যেখানে ইভিএম কাজ করেছে সেখানে পাঁচ শতাংশ, ১০ শতাংশ ভোট। আর যেখানে ইভিএম কাজ করেনি সেখানে বেশি। আমাদের দুই প্রার্থী শুক্রবার থেকে শত শত অভিযোগ করেছে, কোনো অভিযোগের প্রতিকার পায়নি। ’

আমীর খসরু বলেন, ‘ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ কী বলছে দেশের মানুষ সেটা বিশ্বাস করছে কিনা, সেটা আজ প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ কী বলছেÑতা নিয়ে জনগণের মাথাব্যথা নেই। ভোট বিএনপি মেনে নেবে কি নাÑসেটা বড় কথা নয়, দেশের মানুষ মেনে নেবে কিনা, সেটাই বড় কথা। মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে কি নাÑসেটাই আজ প্রশ্ন। বিএনপি দেশের মালিক নয়, জনগণ দেশের মালিক। এ ভোট জনগণ মেনে নেবে কি নাÑগণতন্ত্রকামী মানুষ মেনে নেবে কি নাÑসেটাই হচ্ছে প্রশ্ন।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০